কথা নেই! ‘বলি ও হারুন্দে, মনে পড়ল কি ? ‘একটু-একটু পড়ছে।’ ‘বলে ফেলো ।” ‘রোসো বলছি —“ল” না-না, “র” আর “ন” ; “র” হল নী তো ! “র” আর “ন”র মাঝে কী হয় বাৰু ? ‘কী হয় হারুন্দে ? ‘মনে পড়ছে না। মস্থর, “র” আর “ন”র মাঝে কী হয় ? ওহো তুই কেমন করে জানবি ? তোকে তো আমি সেই লোহার বাক্সতে পুরে জলে ভাসিয়ে দিলুম। “র' আর "ন" তার মাঝে হল—” ‘তোমার মাথা আর মুণ্ডু ! শোনে। কেন বাবু, ও পাগলের কথা । ও চিরকালই হারুন্দে, কোনো কালে হারুন-অল-রসিদ নয় । ওর বাপ ওকে লেখাপড়া শেখাতে কলকাতায় পাঠিয়েছিল । সেখানে পৃথিবীর ইতিহাস, পারস্য উপন্যাস আর ডিটেকটিভ গল্প পড়ে-পড়ে ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কখনো এক টুকরো ইতিহাস, কখনো উপন্যাস, দু ছত্তর বা কবিতা, দুটো বা সত্যি কথা, দশটা বা মিছে কথা। কখনো হাততালি দিচ্ছে, কখনো গালাগালি। মাথাটা যেন বাংলা খবরের কাগজ— মূল্য দুই পয়সা মাত্র ! আমি কিচ কিন্দে এই কিচ কিন্ণয় থেকে বুড়ো য়ে গেলুম, সিন্ধবাদকে তো কখনো এ তল্লাটে দেখিনি। একটা কথা বললেই হল— সিন্ধবাদ এল, চুম্বকে তার সিন্দুক টেনে নিলে ! জাহাজ টেনে নেয় এত বড়ো চুম্বক-পাথর— সে পাথর গেল কোথায় ? হারুন্দের কথা নেই। দেখলে বাবু, গল্পের খেই ধরতে জানে না, গল্প বলতে আসে। ও তো সেদিনের ছেলে। গল্পের ও জানে কী ? বোগদাদ-ফোগদাদ তো সেদিনের কথা ; সত্য, ত্রেতা, দ্বাপন, কলি— এই চাব যুগের গল্প আমি জানি । গল্প শুনতে চাও তো শোনো—’ ২৫৩
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।