পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পান্তাভাত কী কিচ কিন্দে ? ‘ভিজে ভাত বাবু। তোমায় তো বলেছি এখানে সব উল্টো, ডাঙার ওপর মাসির বাড়িতে খাও তোমরা শুকনে ভাত আর জলের নিচে পিসির বাড়িতে সবাই খায় ভিজে ভাত। তোমাদের কলাইয়ের ডাল পাতলা— যেন জল, আর এখানকার কলাইয়ের ডাল যেন মুক্তোর মতো ঝুরঝুরে । এই কথা হচ্ছে এমন সময় শুনি খেতের ভেতর থেকে ভো-ভো করে শাখ বেজে উঠল । এত শাখ বাজে কেন কিচ কিন্দে ? শাখচুর্ণির সব শাখ বাজিয়ে কলাই-খেত থেকে পাখি তাড়াচ্ছে বাবু।” দেখি, শাখচুর্ণির সব শাখ বাজিয়ে খেতময় ঘুরে-ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের আর সি দু নেই— কেবল দুপাটি করে দাত আর একটা মস্ত কান, তাতে একটি ফুটে । জাতিকলের মতো ছুপাটি দাত তারা খুলছে আর বন্ধ করছে, আর তাদের সেই কানের ফুটোগুলো দিয়ে ভো-ভো করে শাখের শব্দ বার হচ্ছে । কতদূর থেকে যে সে শব্দ শোনা যাচ্ছে তার ঠিক নেই! শুড়-ফুল-ফুল কাচুমাচুর দেশ পেরিয়ে চলেছি, তখনো শুনছি সেই শাখের আওয়াজ ! যেমন এক-একবার শাখের শক আসছে আর অমনি দেখছি শুড়-দুল-ফুলের যত শুড় সব ভয়ে কেঁচা হয়ে ল্যাজ গুটিয়ে মুখ কাচুমাচু করে গর্তে লুকোচ্ছে। ‘ও কিচ কিন্দে, পিসি এত কেঁচো নিয়ে করেন কি ? "তিনি ওই কেঁচোর টোপ দিয়ে ছিপ ফেলে র্কাকড় ধরেন।' ‘একটা ছিপ পাই তো গোটাকতক কাকড়া ধরি।’ অমনি দেখি মস্ত-মস্ত কাকড়া দাড়া নেড়ে-নেড়ে বলছে, "ধরে-না দেখি! আঙুলটি কাটব নাকি – কট্‌-কট-কট ! যাঃ-যাঃ দূর হ ! যত বলি দূর হ ততই দেখি কাকড়াগুলো এগিয়ে আসে। ২৬৭