পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখন পিসির দেশের কালাচাদ নাচতে-নাচতে পুবদিকে অস্ত যাচ্ছেন আর সোনারচাদ নাচতে-নাচতে পশ্চিম দিকে উদয় হচ্ছেন। এই দুই চাদের আলোয় সমস্ত পৃথিবীটা গোবিন্দর মায়ের ফুলে৷ গালের মতো খানিক আলো খানিক কালো দেখা যাচ্ছে । আকাশ দেখতে হয়েছে যেন হলদে-আর-কালো ডুরেশাড়িখানি । হাওয়া বইছে আধেক গরম আধেক ঠাও। আমাকে দেখে গোবিন্দর মা বলছে, ‘ও কিচ কিন্দে, এ কাদের ছেলে গা ? ‘আমাদের দাদাবাবু গে। মামার বাড়ির লোক। এনাকে একবার রথতলাটা দেখিয়ে আনি । "চলো, আমিও যাই একবার রথতলায়' — বলেই গোবিন্দর মা ভোদড়-ছানাটি কোলে আমাদের সঙ্গে চলল। সমুদূরের ধারেই রথতলা। বেশ জায়গাটি। চারদিকে ঝাউবন, মাঝে অনেকখানি বালি— পরিষ্কার তকতক করছে। তারই মাঝে মুড়ে রথখানা— তার চাল নেই, চুড়ে নেই। সেইখানে দেখি হারুন্দে হয়েছে সদার আর কামুন্দে বামুন্দে ঝালুন্দে মালুন্দে হয়েছে চিতাবাড়ি আর ধীইকিড়ি। চিতাবাড়ির দল ধরেছে দুই লাঠি, ধাইকিড়ির দল ধরেছে দুই লাঠি । হারুন্দে এক-একবার হাক দিচ্ছে— ‘ইকড়ি-মিকড়ি চামচিকড়ি চাম কোঁটো মজুদার ধেয়ে এসো দামুদার— আর অমনি দুই দলে ঠকাঠক লাঠি ঠুকছে। দেখতে-দেখতে দেখি আর মানুষ চেনা যায় না! কোথায় কামুন্দে কোথায় বামুন্দে কোথা বা ঝালুন্দে কোথা বা মালুন্দে। কেবল একরাশ কাকড় আর মাকড়সা বালির ওপর ইকড়ি-মিকড়ি কচ্ছে। আর তাদের মাথার ওপরে একরাশ কালো-কালো চামচিকে চামচিকড়ি ডানাগুলো ঝেড়ে-ঝেড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে! লড়াই হতে-হতে যেমন একট} २१२