রক্তকম্বলের আসন, তারি উপরে রাজার আট গণৎকার খড়ি-হাতে, পুথি খুলে, রানীর স্বপ্নের কথা গণনা করতে বসেছেন। তাদের কারো মাথায় পাকা চুল, কারো মাথায় টাক, কারো বা ঝুটি বাধা, কারো বা ঝাটা গোফ ! সকলের হাতে এক-এক শামুক নস্তি । আট পণ্ডিত কেউ কলমে লিখে, কেউ খড়িতে দেগে রানীর স্বপ্নের ফল গুণে বলছেন : ‘সূর্যস্বপ্নে রাজচক্রবর্তী পুত্র মহাতেজস্বী। চন্দ্রে তথা রূপবান গুণবান রাজাধীরাজ দীর্ঘজীবী । শ্বেতহস্তীর স্বপ্নে শান্ত গম্ভীর জগৎ-দুর্লভ এবং জীবের দুঃখহারী মহাধাৰ্মিক ও মহাবুদ্ধ পুত্রলাভ। এবার নিশ্চয় মহারাজ, এক মহাপুরুষ এই শাক্যবংশে অবতীর্ণ হবেন । শাস্ত্রের বচন মিথ্যা হয় না । আনন্দ করো ? চারিদিকে আমনি রব উঠল— ‘আনন্দ করো, আনন্দ করো ! অন্নদান কবে, বস্ত্রদান করে, দীপদান, ধূপদান, ভূমিদান করে। ’ কপিলবাস্থতে বাজাব ঘরে, প্রজার ঘবে, হাটে-মাঠে-ঘাটে আনন্দের বাজনা বেজে উঠল, আকাশ আনন্দে হাসতে লাগল, বাতাস মানন্দে বইতে লাগল। রাজমুকুটের মানিকেব দুল, রাজ-ছত্তরের মুক্তোর ঝালব, মন্ত্রীব গলায় রাজার-দেওয়া কণ্ঠমালা, পণ্ডিতদের গায়ে রানীর দেওয়া ভোটকম্বল, দাসদাসী দীনদুঃখী ছেলে-বুড়োর মাথায় রাজবাড়িব লাল চেলী আনন্দে দুলতে থাকল। প্রকাণ্ড বাগান ; বাগানের শেষ দেখা যায় না, কেবলি গাছ, গাছের পর । ছ, আর সবুজ ঘাস ; জলেব হাওয়া, ঠাণ্ড ছাওয়া, পাখিদেব গান আর ফুলের গন্ধ । বাগানেৰ মাঝে এক প্রকাণ্ড পদ্মপুকুর । পদ্মপুকুরেব ধারে আকাশ-প্রমাণ এক শাল গাছ, তার ডালে-ডালে পাতায়-পাতায় ফুল ধরেছে ; দখিনে বাতাসে সেই ফুল, গাছতলায় একটি শ্বেতপাথরের চৌকির উপরে উড়ে পড়ছে। সন্ধে হয়ে এল । স্বরূপা যত পাড়ার মেয়ে পদ্মপুকুরে গা ধুয়ে উঠে গেল। উবু কুটি, গলায় কাটি, খৃষ্ট কানে সোনার মাকড়ি একদল মালি-মালিনী শুকনো পাতা ঝাট দিতে-দিতে, ফুলের २br> चा. २-->>
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।