ঋষির আশাপথ চেয়ে নালক দিন গুণছে, ওদিকে দেবলঋষি কপিলবাস্তু থেকে বুদ্ধদেবের পদধূলি সর্বাঙ্গে মেখে, আনন্দে দুই হাত তুলে নাচতে-নাচতে পথে আসছেন আর গ্রামে-গ্রামে গান গেয়ে চলেছেন— ‘নমো নমো বুদ্ধদিবাকরায়। নমো নমো গোতমচন্দ্রিমায়। নমো অনন্ত গুণাণবায়, নমো শাকানন্দনায় । শরৎকাল। আকাশে সোনার আলো । পথের দুইধারে মাঠেমাঠে সোনার ধান । লোকের মন আর ঘরে থাকতে চায় না । রাজারা ঘোড়া সাজিয়ে দিগ বিজয়ে চলেছেন, প্রজার দলে-দলে ঘর ছেড়ে হাটে-মাঠে-ঘাটে— কেউ পসরা মাথায়, কেউ ধানখেত নিড়োতে, কেউবা সাত-সমুদ্র-তেরো-নদী-পারে বাণিজ্য করতে চলেছে । যাদের কোনে কাজ নেক্ট তারাও দল-বেঁধে ঋষির সঙ্গে সঙ্গে গান গেয়ে চলেছে— ‘নমো নমো বুদ্ধদিবাকরায় ! সন্ধ্যাবেলা । নীল আকাশে কোনোখানে একটু মেঘের লেশ নেই, চাদের আলো আকাশ থেকে পুথিবী পর্যন্ত নেমে এসেছে, মাথার উপর আকাশ-গঙ্গ এক টুকরো আলোর জালের মতো উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত দেখা দিয়েছে । দেবলঋষি গ্রামের পথ দিয়ে গেয়ে চলেছেন— ‘নমো নমো গোতমচন্দ্রিমায় । মায়ের কোলে ছেলে শুনছে— ‘নমো নমো গোতমচন্দ্রিমায়। ঘরের দাওয়ায় দাড়িয়ে মা শুনছেন— ‘নমো নমো ; বুড়ি দিদিমা ঘরের ভিতর থেকে শুনছেন— ‘নমো ; আমনি তিনি সবাইকে ডেকে বল স্থন— ‘ওরে নোমো কর, নোমে কর। গ্রামের ঠাকুরবাড়ির শাখঘণ্টা ঋষির গানের সঙ্গে একতানে বেজে উঠছে— নমো নমো নমো । রাত যখন ভোর হয়ে এসেছে, শিশিরে নুয়ে পদ্ম যখন বলছে— নমো, চাদ পশ্চিমে হেলে বলছেন– নমো, সেই সময়ে নালক ঘুম থেকে উঠে বসেছে আর অমনি ঋষি এসে দেখা দিয়েছেন । আগল খুলে গেছে । খোলা দরজায় সোনার রোদ একেবারে ঘরের ভিতর পর্যন্ত এসে নালকের মাথার উপরে পড়েছে। নালক উঠে ঋষিকে প্রণাম করেছে আর ঋষি নালককে আশীৰ্বাদ করছেন— ‘সুখী হও, মুক্ত হও । చిపె\రి
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।