পারে। ভরা নদীর মতো ভরপুর আনন্দ, পূর্ণিমার চাদের মতো পরিপূর্ণ আনন্দ জগৎসংসার আলোয় ভাসিয়ে, রসে ভরে দিয়েছে। আনন্দের বান এসেছে। আর কোথাও কিছু শুকনো নেই কোনো ঠাই খালি নেই। সিদ্ধার্থ দেখতে-দেখতে চলেছেন মিলনের আনন্দ । বাকে-বাকে দলে-দলে আনন্দ আজ জোর করে দোর ঠেলে বুকে ঝাপিয়ে পড়ছে, গলা জড়িয়ে ধরছে। কেউ আজ কাউকে ভুলে থাকছে না, ছেড়ে থাকছে না, ছেড়ে যাচ্ছে না, ছেড়ে দিচ্ছে না ! আনন্দ কার নেই ? আনন্দ নেই কোনখানে ? কে আজ দুঃখে আছে, চোখের জল কে ফেলছে, মুখ শুকিয়ে কে বেড়াচ্ছে ? যেন তার কথার উত্তর দিয়ে কোন এক ভাঙা মন্দিরের র্কাসরে খনখন করে তিনবার ঘা পড়ল— আছে, আছে, দুঃখ আছে! অমনি সমস্ত সংসারের ঘুম যেন ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দিয়ে একটা বুক ফাট কান্ন উঠল— হায় হায় হা হা ! আকাশ ফাটিয়ে সে কান্না, বাতাস চিরে সে কান্না ! বুকের ভিতরে বত্রিশ নাড়ি ধরে যেন টান দিতে থাকল— সে কান্না ! সিদ্ধার্থ সুখের স্বপ্ন থেকে যেন হঠাৎ জেগে উঠলেন। আকাশের দিকে চেয়ে দেখলেন, সব ক’টি তারার আলো যেন মরণ-মানুষের চোখের মতো ঘোলা হয়ে গেছে! পুথিবীর দিকে চেয়ে দেখলেন, রাত আড়াই-পহরে জলে-স্থলে পাঙাশ কুয়াশার জাল পড়ে আসছে— কে যেন শাদা একখানা চাদর পৃথিবীর মুখ ঢেকে আস্তে-আস্তে টেনে দিচ্ছে। ঘরে-ঘরে যত পিদিম জ্বলছিল সবগুলো জ্বলতে-নিবতে, নিবতে-জলতে, হঠাৎ এক সময় দপ করে নিবে গেল, আর জ্বলল না— কোথাও আর আলো রইল না । কিছু আর সাড়া দিচ্ছে না, শব্দ করছে না ; আকাশের আধখানা-জুড়ে জলে-ভরা কালে মেঘ, র্কাদো-কাদো দুখানি চোখের পাতার মতো মুয়ে পড়েছে চোখের জলের মতো। বৃষ্টির এক-একটি ফোটা ঝরে পড়ছে— আকাশ থেকে পৃথিলীর উপর । তারি মাঝ দিয়ে বুদ্ধদেব দেখছেন দলে-দলে লোক চলেছে— শাদা চাদরে ঢাকা 'OOH
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।