এবং রাজ্ঞী রাজার অনুগমনের জন্য প্রস্তুত হইয়া চিতাসজ্জার আদেশ দিলেন । চারি দিক বরফে ঢাকা । কে যেন পৃথিবীর উপরে একখানা শবাচ্ছাদন সাদা চাদর টানিয়া দিয়াছে, তাহার উপর দিয়া তুজ্ঞানের মৃতদেহ বাহকের লইয়া চলিয়াছে, সঙ্গে রানী বাক্দেবী, আর দলে দলে বভূক্ষু কাতর প্রজা “রানীমা দান করে, দান করো” বলিয়া চলিয়াছে। হায় রানীর হাত আজ শূন্ত । দারুণ তুর্ভিক্ষে রানীর হাতের অলংকার পর্যন্ত বিকাইয়া গেছে । অনুচরের রাজ-দেহ চিতার উপরে তুলিয়া দিল । নির্বাক রানী ধীরে ধীরে চিতায় উঠিবেন এমন সময় ক্ষুধিতের দল আবার চীৎকার করিল ; “দান দিয়া যাও, দান দিয়া যাও।” আমার বুকের ভিতরে কে যেন একটা ধাক্কা দিয়া বলিল, দেখেছ লোকগুলার অন্যায় ! ঠিক সেই সময় একটা প্রচণ্ড আলোয় আমার চক্ষু ঝলসিয়া গেল এবং কে যেন আমাকে ঠেলিয়া বলিল— “বাবুজী ’’ চক্ষু মেলিয়া দেখি– মঠধারী ! আমার চোখের সম্মুখে লণ্ঠন ধরিয়া সে বলিতেছে— “বরফ পড়িতেছে, শীঘ্র আহার করিয়া শয়ন করুন” । স্বপ্নের সঙ্গে মিশিয়া গল্পটা বেশ জমিয়া উঠিয়াছিল ; হঠাৎ বাধা পাইয়া মনটা ক্ষুব্ধ হইল। আহারান্তে তুজ্ঞানের গল্পটা শেষ করিলাম। রাজ্ঞী বাকৃদেবীর বাক্য ছাড়া আর এমন-কিছু ছিল না যে তিনি হাবীকে দান করেন ; তিনি উধ্বমুখে কাতর কণ্ঠে শুধু বললেন– “হে দেবতা, দীনের আহার প্রেরণ করে৷ ” বলিয়া তিনি পতির সহিত চিতারোহণ করিলেন। সতীর বাক্য সার্থক করিয়া সেই সময়ে দেবতার বরের মতো প্রজাদের ঘরে ঘরে অসংখ্য কপোত দলে দলে আসিয়ু দেখা দিল। দিনের পর দিন এই কপোতমাংস প্রজাদের অন্নস্বরূপ হইয়া রহিল। বাকৃদেবীকে সেই হইতে লোকে বলিত বাকপুষ্টা। এবং যে বনে তিনি চিতারোহণ wogbo
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।