কালোর মাধুরী লইয়া দুই শুষ্ক জীবন-সরোবরের উপর করুণা বর্ষণ করিতে আসিয়াছিল তাহ রাজার চিতাভিষেক আর রাজকুমারের রাজ্যাভিষেক এই দুই অভিষেক সম্পূর্ণ করিয়া দিয়া চলিয়া গেছে। উত্তর ভারতের একমাত্র অধীশ্বর রাজগণরাজ শ্রীহৰ্ষ এখন অচল অটলভাবে কাশ্মীরের রাজসিংহাসনে বিরাজ করিতেছেন। দিগদিগন্তঃাবী রাজ-ঐশ্বর্যের বিলাসবন্ত জলে সম্পূর্ণ স্ফীতিলাভ করিয়া সরোবরের পূব শুষ্কত। মনে রাখিবার এখন আর অবকাশ নাই ; চারি পার উল্লঙ্ঘন করিয়া সে এখন প্রবল টানের মহানন্দে নৃত্য করিতে করিতে কালসাগরে মিলিতে চলিয়াছে ;– আর সেই মহা কল্লোলের উপর রাজ-কবি হর্ষের সোনার বীণা চারিট সোনার তারে নিষ্ক দীনারের ঝনৎকার তুলিয়া বাজিতেছে— “গুপ্তধনের অধিকারী পুথিবীর বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া সবলে ধনরাশি আহরণ করিতেছি । ধরিত্রীব শোণিতলিপ্ত অপর্যাপ্ত নিষ্ক দীনব ধৌত করিতে নিষ্কলুষ বিতস্তাবাবি বহুদূর পর্যন্ত কলুষিত হইয়া গিয়াছে । দান-বহিত ভোগ-বহিত সপের ন্যায় বাযমাত্র ভক্ষণ কবিয়। আমার জন্য কতকাল ধরিয়া কত কৃপণ কত নিধিই বক্ষা কলিয়া আসিয়াছে।” হুষের দারিদ্র্য দূরীভূত হইয়ছে। সুমঙ্গৎ ঐশ্বর্যের চমৎকার দীপালী হাল দিকে দিকে লম্বমান, অতি অপরূপ স্থবর্ণদীপ্তি বেষ্টন কলিয়া নানা ভোগ, নানা বিলাস, পতঙ্গের মতো অবিশ্রান্ত ঘূর্ণমান হষ-পূর্ণিমাল এই দীপালী উৎসব জগতে অনুপম । দশদিক্পাল ও ইন্দ্র অপেক্ষা অধিক ঐশ্বযসম্পন্ন মহীপাল হর্ষের এই নৈশ সভার বর্ণনা কোন কবি বৃহস্পতি করিতে সক্ষম । চন্দ্রাতপ মেঘবৎ, দীপাবলী বিদ্যুৎপ্রাকারবং, স্বর্ণদণ্ড শ্বেতছত্রপুষ্পিত মন্দারবং, গায়কবর্গ গন্ধৰ্ববৎ, নর্তকীরা অপসরোপমা, পণ্ডিতগণ ঋষিতুল্য, রাজন্তবর্গ নক্ষত্রের ন্যায়— ইহা যক্ষরাজ ও যমরাজের সুচির সংগম, দান ও ভয়ের রুচির বিহার স্থল। এই ভূস্বর্গে কালচক্রের কঠোর ঘর্ঘর VGA X
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।