যুগ্মতার আসিধার নখাঘাতে দিল্লীকে ক্ষতবিক্ষত করিয়া শু্যেনপক্ষীর মতো নাদির শাহ যেদিন হিন্দুস্থানের তখতে তাউস ছিনাইয়া লইয়া জয়ডস্ক বাজাইয়া চলিয় গেলেন সেদিন অক্ষম বাদশাহ রঙ্গীলে মহম্মদশাহকে দিল্লীর জগদবিখ্যাত দেওয়ানি আমে শূন্য রত্নবেদীর সম্মুখে দাড়াইয়। বলিতে শুনিয়াছিল অনেকেই— “— সামতে আমালে মা, ই মুরতে নাদির গ্রিফত” কপাল ভাঙিয়াছে, আমারই কর্মফল নাদির মূতিতে দেখা দিয়াছে। স্বৰ্গচু্যত ইন্দ্রের ন্যায় হতভাগ্য সেই মহম্মদ শাহের কপালের দোষ দিমাছিল অনেকেই এবং তাহারই কর্মফল যে ফলিতেছে তাহাও বাম- র বলিতে বাকি রাখিল না অনেকেই– সালেবেগ ছাড়া । সালেবেগ ছিল বাদশাহের মুহুরী এবং চিত্রকর। গীতানুরাগী বাদশাহ সারাদিন ধরিয়া যে-সকল গান রচনা কবিতেন সেগুলিকে স্বর্ণীক্ষরে সাজাইয়। বিচিত্র চিত্রে ফুটাইয়া বাদশাহের কুতুবখানায় ধরিয়া দেওয়াই তাহার কাজ ছিল । সে ছিল রঙ্গীলে মহম্মদশাহের ‘জর রী কলম’– সুবর্ণ লেখনী । আমদরবারের মণি ভিত্তি আলোকিত করিয়া সোণ র অক্ষর জ্বলজ্বল করিতেছে : “ভূস্বর্গ যদি কোথাও থাকে তো এইখানে এইখানে” । ঠিক তাহারই নিম্নে হৃতসর্বস্ব মহম্মদ শাহ এই ছবিট। সালেবেগের প্রাণে তীরের মতো আসিয়া বিধিতে বিলম্ব ঘটে নাই, স্বতরাং যে সময়ে আর সকলে অদৃষ্টের ফের লইয়া ব্যস্ত সেই সময়ে কথামাত্র না বলিয়া নির্বাক্ বাদশাহকে যথারীতি কুনিশ করিয়৷ নিঃশব্দ পদসঞ্চারে সে দরবার হইতে চলিয়া আসিল ও বাড়ি আসিয়। একটুকরা কাগজে সেইদিনের ছবিটা আর সেই ছবির নীচে মহম্মদ শাহের কাতর অর্ধোক্তিটুকুও লিখিয়া নিজের রঙ তুলি একখানি রুটি এক ছুরি গুছাইয়া লইয়া অবিলম্বে সালেবেগ দিল্লী ছাড়িয়া কাবুলের VHIVG অ, ২—২৩
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৭১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।