পথ ধরিল। সালেবেগের ঘরে এমন কেহ ছিল না যে মহম্মদ শাহের সুবর্ণ লেখনীর খবরদারি করে— ন বিবি না বেট। সঙ্গীর মধ্যে ছিল এক পোষা বুলবুল ; খাচ খুলিয়া দিতেই একদিকে সে উড়িয়া পালাইল। পরদিন কলমের সন্ধানে লোকের উপর লোক আসিয়া যখন বাদশাহকে গিয়া শূন্ত খাচা ও খালি ঘরের সংবাদ দিল ; কলমের কোনো সন্ধানই দিল না, তখন মহম্মদ শাহ বড়ো দুঃখেই বলিয়া উঠিলেন— “হায়, ব্যথিতের আর্জি দুঃখের নিবেদন লিখিয়া প্রচার করিবার উপায় পর্যন্ত রহিল না, আজ অবধি মনের দুঃখ মনেই থাক প্রকাশে কাজ নাই।” চতুরঙ্গ বাহিনী চলিয়াছে, জয় দুন্দুভি বাজাইয়া নাদির চলিয়াছে, মমুদের মরুভূমির উপর দিয়া খর রৌদ্রের ভিতর দিয়া অসূর্যম্পশু রমণীর মতো মোগল বাদশাহের রমণীয় সুখশয্যা ময়ূর সিংহাসন চলিয়াছে ; আর চলিয়াছে সেই সিংহাসন স্কন্ধে বহিয়া জরুরী কলম সালেবেগ সিপাহীর ছদ্মবেশে। অদূরে খজুর বনের স্নিগ্ধ ছায়ায় রোজ ইমাম মুসিরেজ ; আরো দূরে মমুদের মুদৃঢ় কেল্লা । নাদিরি ফৌজ শাহার হুকুমে তখতে তাউস ইমাম রৌজায় উপঢৌকন দিয়া কেল্লায় প্রবেশ করিল। ’ বহু অশ্রুপাত বহু রক্তপাতে কলঙ্কিত ময়ুর সিংহাসন পবিত্র মোকবারায় উপহার দিয়া আপনাকে অক্ষয় স্বর্গের অধিকারী জানিয়া নাদির পরম সুখে বিশ্রাম করিতে লাগিলেন কিন্তু এবার নাদিরি হুকুম তামিল হইল না, মোক্বারা হইতে ময়ুর সিংহাসন কে জানে কে উপযুপরি তিন রাত্রি টানিয়া ফেলিতে লাগিল। চতুর্থ দিনে ক্রোধান্ধ নাদির তলোয়ার খুলিয়া ইমামের রোজার সম্মুখে সদৰ্পে দাড়াইয়া বারবার বলিতে লাগিলেন “রজ অজমন জঙ্গমি ক্ষহিদ যুদ্ধং দেহি যুদ্ধং দেহি! প্রতিবারেই ইমাম মুলিরেজর শূন্ত রোজা হইতে প্রতিধ্বনি আসিল “অজমন জঙ্গমি ক্ষহিদ, জঙ্গমি ক্ষহিদ,”। সত্য সত্যই সেই রাত্রে মুখমুপ্ত নাদিরের vඑංA8
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।