পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতন চুটকি বাস্তুভিটে যাকে বলি। সে কী আশ্চর্য কারখানা ! পাখির ডিমের উপরের খোলার মতো পাতলা, হাজার হাজাব বছরের পুরোনো চিনেমাটির তার দেওয়াল— এমন হালকা এমন ঠনকে হয়ে গেছে যে, শব্দের রেশ, বাতাসের পরশ পেলে কাপতে থাকে— মনে হয় এখনি বুঝি ফেটে চৌচির হল। এই ঠুনকো পাতলা চিনেমাটির আশ্চর্য বাড়ি পৃথিবীর অষ্টম বিস্ময়। এর মধ্যে হুজুরের চাকর-বাকর যারা কাজকর্ম করে বেড়াচ্ছে তারা আস্তে উঠছে, আস্তে বসছে, আস্তে চলছে, আস্তে বলছে- হুজুরের ভয়ে যত না হোক, পাছে কিছু তারা ভাঙে, পাছে তাদের সেই পুরোনো ঠুনকো দেওয়ালের কোথাও আঁচড় লাগে সেই ভয়েই তারা সর্বদা সাবধানে আছে। শুনেছি এক সময় একজন নতুন চাকর অসাবধানে হঠাৎ চিনের পুতুলের একটু চটা উঠিয়ে ফেলেছিল। যখন তার মাথা মুড়িয়ে ঘোল ঢালবার হুকুম হল তখন সে বললে— অপমানের জন্যে দুঃখু করিনে : অমন পুতুলটি খণ্ডিত হয়ে গেল আমারই হাতে ! প্রাণের চেয়ে পুতুলই ছিল তাদের বড়ে । এই বাড়ির বাগান— আরো আশ্চর্য! কত বড়ো যে সে বাগানখানা তা সে বাগানের সর্দার-মালীও বলতে পারে না। কুঞ্জবন সে গিয়ে মিলেছে মহাবনে, মহাবন সে মহাসমুদ্রের ভিতর পর্যন্ত নেমে গেছে— ছাওয়ার মতো হয়ে। এখানে এক-একটি যত্বের গাছে যখন ফুল ধরে, ফল ফলে, তখন তাদের বোটায় মালীরা সোনার আর রুপোর ঘুঙুর বেঁধে দেয় ; বাতাসে সেগুলি বাজতে থাকে, তবে জানা যায় বাগানে অমুক দিকে ফুল ফুটেছে, অমুক দিকে ফল ফলেছে— এত বড়ো সে বাগান, এমন চমৎকার এমন সৌখিন বাগান। এই বাগানের একটি দিক— সেদিকের খবর না-জানেন হুজুর, না-জানে তার মালী, কেবল জানে দেশের যত লক্ষ্মীছাড়া আর \94ఏ