ফুটো-ফাট কাথায় রোদবৃষ্টি মোটেই আটকাবে না; উপরন্তু যে কাজগুলো এখন করছে তাও করতে পারবে না।” মহারাজ বললেন— ‘কবিতা আর র্কাধা আর তার উপর আমি ধরলেম ছাতা ’ বলে রাজ উঠে কবির মাথায় রাজছত্র ধরলেন। আনন্দে সভাসদ সবাই ধন্য ধন্য বলে উঠল। t কবি ছল-ছল চোখে বললেন— প্রভু, এ দাসকে কোন পূবদেশের রাজছত্রের তলায় নির্বাসন দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাচ্ছেন ? —বন্ধু,এইখানে '—বলে রাজ ছাতা রেখে কবিকে বুকে ধরলেন মাতৃগুপ্ত বললেন– ‘বন্ধু, ছাতার আড়াল সরে গিয়ে তোমার প৷ পড়েছে দীনের র্কাথায়, অমনি খোলা আঙিনায় শেষ পর্যন্ত তোমার ছায়া বিস্তারিত হল দেখ ? রাজা বললেন– ‘বন্ধু, এই ক্রীড়া-পর্বতের তপ্ত মাটি ওই দেখ তোমার ও দায়া পেয়ে অনেক দূর পর্যন্ত শীতল হচ্ছে।’ গ্রীষ্মকাল এইভাবে কাটল । বর্ষ এসে উপস্থিত হল। উজ্জয়িনী বাজপ্রাসাদের চূড়ায় ময়ুর সব পাখা বিস্তার করে মেঘের দিকে চেয়ে কেকারব করছে ; আকাশে ইন্দ্রধনু মেঘের উপরে সাত রঙ নিয়ে ফুটে উঠেছে। রাজা বললেন— ‘ছাতার দরকার এখনো কি বোধ করছ না কবি ? কবি বললেন– এখনো নয় মহারাজ ! কেননা এখনো শুনছি ময়ূরেরা বলাবলি করছে— হায়, অসার ইন্দ্রধনুর র দেখে মেঘ মোহিত হয়ে রইল আর চিত্রবিচিত্র পাখী মেলে Tামরা যে তার গুনগান করে কৃপাবারি ভিক্ষা করছি, তার জন্যে মেঘ পুলকবিন্দু যা দিচ্ছে তাতে তৃষ্ণা মেটা দূরে থাকু, পালকগুলো যে ধুয়ে নেব তাও হচ্ছে না। ইন্দ্রদেব যতক্ষণ আকাশ ফুটো করে জল না ঢালছেন ছাতার কথা মনেও আসছে না । এখন কেবল মনে আসছে— সন্তপ্তানাং ত্বমসি শরণম্” রাজা বলে উঠলেন– “যদি তাই হয় তবে— বহুগুণরমণীয়ে যোষিতাং চিত্তহারী, তরুটিপলতানাং বান্ধবো নির্বিকারঃ । জলদ ৩৭১
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।