সময় এষ প্রাণিনাং প্রাণভূতে, দিশতু তব হিতানি প্রায়শে বাঞ্ছিতানি।’ এই বলে রাজা মাতৃগুপ্তকে একখানি পত্র দিয়ে বললেন— ‘আমার এই পত্র নিয়ে আপনি কাশ্মীরে গমন করুন এই মুহূর্তে ? মন্ত্রী রাজার কাছে এসে বললেন— ‘কবিবরের যানবাহন *ficats[---" রাজা ঘাড় নেড়ে বললেন— ‘কিছু প্রয়োজন নেই।’ মন্ত্রী অবাক হয়ে কবির দিকে চাইলেন। কবি ছেড়া র্কাথায় রাজার শাসন-পত্র বেঁধে নিয়ে পথে বার হলেন— আর কিছু প্রয়োজন নেই বলে। কবি চলেছেন মেঘে-ছায়া-করা দিনগুলির মধ্যে দিয়ে নদীতীরে তীরে গ্রামে গ্রামে বিশ্রাম করে। বনের পথে পাখিদের গান শুনতে শুনতে, মাঠে-ঘাটে নান ছবি নানা শোভা দেখতে দেখতে সারা পথ তিনি আনন্দে ভরপুর হয়ে চলেছেন। শেষে একদিন দূরে হিমাচলের পায়ের কাছে কাশ্মীরে এসে কবি উপস্থিত। তখন সেখানে ফুলের সময়। কবি দেখলেন সমস্ত দেশ ফুলে ফলে সবুজে যেন একখানি বিচিত্র রাজাসনের মতো বিছানো রয়েছে। তার উপর বরফের চূড়া শ্বেত ছত্রটির মতো শোভা ধরেছে। কবির পথের ক্লেশ দূর করে পর্বতের বাতাস ফোটা ফুলের সুগন্ধে উপবন আমোদ করছে। ছেড়া কাথায় মাথা রেখে মাতৃগুপ্ত সুখে নিদ্রা যাচ্ছেন ; কখন দিন শেষ হয়ে সন্ধ্যা আসছে তার খবরেও আসে নি। হঠাৎ স্বপ্ন দেখে যেন জেগে উঠলেন– যেন মনে হল একটি সিংহাসনে র্তাকে বসিয়ে গায়ের কাথাখানা কারা কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে আর তিনি প্রাণপণ হাকছেন– মহারাজ রক্ষে করুন। আমার কাথা আমি কিছুতে ছাড়ব না ! মহারাজ কিছু বলছেন না, কেবলই হাসছেন । —কবি চেয়ে দেখলেন সত্যিই এক হরিণশিশু তার কাথার উপর আরামে মাথাটি রেখে নিদ্রা দিচ্ছে ; কবিকে উঠতে দেখে বনের ৩৭২
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৯০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।