পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড়ো নেবু পেড়ে তাদের খেতে দিত, তারা মনের আনন্দে তাই খেত। হায়, তারা তো জানত না এ ঋষি ভণ্ড ঋষি, এ ফল মায়াফল । যখন সন্ধ্যা হয়ে আসত, বন আঁধার হত, বাপ-মায়ের কোলে ছোটো ছোটো সঙ্গীদের কাছে যাবার জন্য সেই ছোটো ছোটো ঋষিকুমারদের প্রাণ আকুল হত, তখন সেই রাক্ষস ইম্বল ডেকে বলত, আয় রে বাতাপি বাহিরে আয়। অমনি সেই ঋষিকুমারদের পেট চিরে বাতাপি নেবুর ভিতর থেকে মায়াবী রাক্ষস বাতাপি বাহিরে আসত। তার পর সেই দুই অস্থর মনের আনন্দে সেই ঋষিকুমারদের রক্ত পান করে, তাদের সেই বনে মাটিতে পুতে রাখত। এক-একটি ঋষিকুমার এক একটি নেবুগাছ হয়ে থাকত । যারা সেই-সব গাছের নেবু খেত, তারা যেমন মানুষ তেমনি থাকত, আর যারা সেই ভণ্ড তপস্বীর কথায় ভুলে সেই মায়া গাছের মায়া ফল খেত তাদেরি পেট চিরে রক্ত পান ক’রে সেই দুই রাক্ষস নেবু বনে নেবু গাছ করে রাখত। এমনি করে সেই বনে কত যে নেবু গাছ হল তার আর ঠিকানা নেই। শেষে তপোবনে আর একটিও ঋষিকুমার রইল না— সেই দুই রাক্ষস সবাইকে খেয়ে ফেললে। ইম্বল, বাতাপি দেখলে বনে আর একটিও ঋষিকুমার নাই ; তখন তারা সেই ঋষিদের খাবার পরামর্শ আঁটতে লাগল ; সারারাত দুজনের পাতার কুটিরে মিটমিটে আলোয় ফুসফুস পরামর্শ চলল । শেষে ভোরবেলা ইল্বল যেমন তপস্বী ছিল তেমনি হল। আর বাতাপি ঘোরানো শিং পাকানো রোম মোটাসোটা একটা ভেড়াহল । সেই ভেড়াকে গাছে বেঁধে ভোরবেলা ইল্বল ঋষিদের আশ্রমে চলে গেল। সেখানে গিয়ে ইহুল ঋষিদের বললে, আজ আমার বাপ-মায়ের শ্রাদ্ধ— আপনারা সবাই আমার আশ্রমে পায়ের ধুলো দেবেন। সে ঋষিদের সঙ্গে ঠিক ঋষিদের মতো এমনি সব কথা কইলে যে ঋষিরা কিছুতে জানতে পারলেন না যে সে রাক্ষস । তারা মনের আনন্দে তপোবনমৃদ্ধ সব ঋষি সেই দুই অমুর ইহুল-বাতাপির আশ্রমে 8 е е