বাতাপি তখন এক ভেড়া হল, আর ইল্বল তাকে গাছে বেঁধে তপস্বী সেজে অগস্ত্য মুনির কাছে গেল। তাকে আদর করে ঘরে এনে কুশাসনে বসতে দিলে, হাত-পা ধুতে জল দিলে। তার পর যত্ন করে সেই মায়া ভেড়ার মায়া মাংস কলার পাতায় গাছের তলায় সেই ঋষিকে খেতে দিলে, ঋষি খেতে লাগলেন। রাক্ষস যত দেয় ঋষি তত খান ; খাওয়া আর শেষ হয় না । শেষ যখন সব মাংস খাওয়া হল, তখন ঋষি উঠলেন। ইল্বল ডাকলে, আয় রে, বাতাপি বাহিরে আয় ! কিন্তু বাতাপি আর বাহিরে এল না । ইল্বল কত ডাকাডাকি করলে তবু এল না। অগস্ত্য ঋষির পেটে আগুন জ্বলছিল, তাতেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল। রাক্ষস ইবল ভাই বাতাপির শোকে পাগল হয়ে উঠল ; ভয়ংকর নিজ-মূর্তি ধরে আকাশ পাতাল ই নিয়ে রাগে ফুলতে ফুলতে অগস্ত ঋষিকে গিলতে মলল। অগস্ত্য কি সামান্ত ঋষি এক গণ্ডষে সাগরের জল পান করেন, রাক্ষস কাছে আসতেই তাকে ভস্ম করে ফেললেন । রাক্ষসের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুড়ে ছাই হয়ে গেল। কতক ছাই হাওয়ায় উড়ে গেল, কতক ছাই জলে ধুয়ে গেল, এক মুঠ রইল । সেই ছাই মুঠ নিয়ে মহৰ্ষি অগস্ত্য সব নেবু গাছের তলায় ছড়িয়ে দিলেন । যে-সব ঋষিরা যে ঋষিকুমারের নেবু গাছ হয়ে ছিল তারা আবার যেমন মানুষ ছিল তেমনি মানুষ হল। আবার সেই কাটাভরা তপোবন, পাতার কুটির, মাটির ঘরে ছেয়ে গেল ; গানের ক্ষেত সোনার ধানে ভরে গেল, ফুলের বাগানে ফুল ফুটে উঠল। ঋষিকুমারেরা মনের আনন্দে সেই নেবুর বনে নেবু পেড়ে নেবু ফুলের মালা গেঁথে মনের আনন্দে খেলে বেড়াতে লাগল ; আর রাক্ষসের ভয় রইল না । 8 o'S)
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।