বাজিকর পালকট নিয়ে ফু দিতেই সেটা উড়ে গিয়ে সভা ছাড়িয়ে মাঠে পড়ল। সভাসুদ্ধ কারিগরকে দুয়ো দিয়ে ॐल । তখন কারিগর গা-ঝাড় দিয়ে উঠে বললে— ‘এইবার আমায় উড়াও তো দেখি কত বড়ো বাজিকর ' সভামৃদ্ধ স্তব্ধ হয়ে দেখতে লাগল, কী হয় ! বাজিকর ফু দেয়, কারিগর হেলেও না । খানিক পরে বাজিকর চোখ রাঙিয়ে বললে—‘কই তুমিই আমায় ওড়াও তো দেখি কত বড়ো কারিগর ? কারিগর একটু হেসে বঁাশিতে ফু দিতেই একধার থেকে একটা লোহার পাখি সভার মধ্যিখানে কারিগরের চেলারা এনে হাজির করলে। কারিগর বাজিকরকে বললে— ‘এগিয়ে এসো | পাখির পিঠে চড়ে পড়ো, কেমন না-ওড়ো দেখি । কলের পাখির বিকট চেহারা দেখে বাজিকর শুকনো মুখে রাজার দিকে চাইতে রাজা বললেন— আচ্ছা হয়েছে, আর পরীক্ষায় কাজ নেই, ছেড়ে দাও।” বাজিকর তখন বললে—“সে কী মহারাজ, ও আমায় ওড়াবে কী ? লোকটা আগে নিজেই উড়ুক তো দেখি কেমন পারে! আমি মনে করলে এখনি ওর পাখিমৃদ্ধ ওকে পালকের মতো এক ফুয়ে উড়িয়ে দিতে পারি। শুধু ছেলেমানুষ বলে এতক্ষণ নেতাই দিয়েছি । আর না, দেখাচ্ছি মজা এবার ” কারিগর হাসতে হাসতে আপনার হাতে গড়া পাখির উপর সওয়াল হল । তখন সন্ধ্যা হয়-হয় । পাখি রঙিন আলোয় ডানা মেলে কারিগরকে নিয়ে মাটি ছেড়ে খুব আস্তে আস্তে আকাশে উঠতে আরম্ভ করলে। রাজা সাধুবাদ দিতে যাবেন এমন সনয় বাজিকর পাখিটার পেটের তলায় দাড়িয়ে একটা মন্তর আউরে চারটে ফু দিয়ে বললে – ‘দেখেন মহারাজ। এবার একেবারে উড়ল । যাঃ ফু : ! আর আসিসনে, ভাগ !
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।