মহারাজা সোনার পালঙ্কে জাড় হয়ে, তাকিয়া হেলান দিয়ে, নবরত্ন-মালা জপ করছন, মহারানী পুরু গদিমোড়া মুখাসনে বসে এক দুই তিন মেজরানী সেজরানী ছোটোরানীর সঙ্গে পাল্লা আর মোতী চুনি আর নীলার ঘুটি নিয়ে দশ পচিশ খেলতে আছেন, এমন সময় মহারাজার ছোটো নাতি— যেন জরীর সাজ পর ছোটোখাটো হাতি— রাজামহাশয়ের গলা জড়িয়ে বললে, গল্প বল না, আজ ভাই ! মহারাজা দাড়ি মুচড়ে গোফে তা দিয়ে শুরু করলেন– সে কি আজকের কথা, তখন চাদটা ছিল ভারি শাদ আর মুয্যিটা ছিল ভারি লাল ! ছোটো নাতনী একটা এই সময়ে কোথা থেকে এসে গল্প শুনতে বসে গেল— ভারি সুন্দরী— সে রাজার গলা জড়িয়ে বললে— চাদ ছিল, মুয্যিও ছিল ! ছিল বই-কি ? চাদটি ছিল ঠিক কেমন ধারা জানো ! “না” বলেই নাতনী চুপ করলে । রাজার নাতি সে দেখতেও মোটা, বুদ্ধিতেও মোট : বলে উঠল, আমি দেখেছি— কেমন ছিল সে চাদ, ঠিক আজা ভাইয়ের দাড়ির মতো শাদা— ! রাজা ঘাড় নেড়ে বললেন, হল না, রঙে মিলল, রূপকে মিলল না একেবারেই ; যাও, আমি গল্প বলব না ! নাতনী রাজার গল। জড়িয়ে বললে, আমি বলব। চাদ ছিল ঠিক যেন রানীদিদির হাসিহাসি মুখটি । রাজা বললেন, হ’ল না হ’ল না – রানী সতরঞ্চের একটা ঘুটি কেটে বললেন, কেন ঠিক হবে না, ও তো ঠিক উপমা দিয়েছে । রাজা বললেন, আগে বুঝি তুমি দেখতে ছিলে চাদের মতো ! তোমার চোখ দুটো ছিল ঠিক ওই আমার পোষা হরিণটার চোখের মতো একেবারে কাজল মাখ, আর দাতগুলি ছিল ঠিক দাড়িমের বিচ, আর ঠোট হুটো দিল একেবারে লোকুচ ফল আর চুল ছিল কাকের পালকের মতো কালো মিস আর— 83 a च. ३-२१
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।