সবাই হেসে শেয়ালের কথা উড়িয়ে দিলে। লড়াই বাধল । জাবনের মধ্যে ভোম্বলদাস এই এক ভুল করলেন— বুদ্ধিমানের কথা ঠেলে, গায়ের জোরের মান রাখতে গেলেন। তার ফলও ফলতে দেরি হল না! লড়াই তো যেমন হবার হল কিন্তু ক্ষুদে শহরের একটি ইটও কেউ খসাতে পারলে না। উল্টে সিংহির মামা ভোম্বলদাস বুড়ে বয়সে হাতে মুখে, নাকে-চোখে, কানে ল্যাজে, বুকে-পিঠে, পেটে এমন কামড় খেলেন যে সর্বাঙ্গ ফুলে ঢোল ! না পারেন চলতে, না পারেন বলতে । খেয়ে মুখ নেই, শুয়ে স্থখ নেই, কাজে মন দিতে গেলে মাথা ঘোরে ; জানোয়ারদের মুল্লুকে রাজকার্য অচল হল । শেয়ালপণ্ডিত মাথায় হাত দিয়ে পড়লেন । বাঘকোটাল, ভালুক-মন্ত্রী এমনি সব রাজার বড়ো বড়ো আমির ওমর গো-বছিকে ডেকে রাজার চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করতে লাগলেন, কিন্তু ঘুটে-ভস্ম, গোবর প্রলেপ এ-সবে কিছুই হল না। তখন বকা-ধামিক এসে ভোম্বলদাস মহারাজকে কৈলাস করবার ব্যবস্থা দিলেন। মহারাজও ভাগ্নে সিংহকে রাজ্যের ভার দিয়ে কিছুদিনের জন্তে কৈলালের দিকে রওনা হতে প্রস্তুত হয়ে বললেন– “আমি তো চলৎ শক্তি-রহিত, আমাকে কেউ যদি রেখে লাসে তো কৈলাসে ষাওয়া ঘটে— নচেৎ উপায় নাস্তি ” বকা-ধামিককে রাজার সঙ্গে যাবার জন্যে নিমন্ত্রণ দেওয়া হল । কিন্তু কৈলাসে দুরন্ত শীত, তার উপর সেখানে মাছ খাওয়া নিষেধ, কাজেই বকা পিছলেন। তিনি গেলে পশুদের ধর্ম-কথা শোনায় কে ? বাঘা-কোটালেরও ওই একই কথা । তিনি না থাকলে গৃহস্থের গোরু জরু সামলায় কে ? ভালুক-মন্ত্রী যেতে পারতেন, কিন্তু নতুন রাজা । সিংহকে নিয়ে রাজকার্য চালাবার জন্তে সদরে থাকা তাব বিশেষ দরকার। কাজেই তারও যাওয়া হয় না । শেয়াল পণ্ডিতকে রাজা বললেন– “পণ্ডিত, তুমি কী বল ?” পণ্ডিত কী জানি কি ভেদে বললেন– “জানোয়ারদের দেশে গায়ের জোরের চর্চাই দেখছি বেশি, বুদ্ধির চাষ কম, সুতরাং 8२¢
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।