পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রতা মরেছে আর তার বউ আর এই আমাদের রত-শেয়ালের ব্যাট শেয়ালপণ্ডিত মাথায় হাত দিয়ে কাদছে। রতাকে মেরে হাড়গুড়িয়ে দেবার সুবিধে হ’ল না কিন্তু বাঘ-কোটাল রতার ল্যাজের চামরটা কেটে নিয়ে পতাকার মতো করে সেটাকে ফঁাসি-কাঠে লটুকে দিয়ে তবে শাস্ত হল। “ছেলের বুদ্ধি নিয়ে রত ল্যাজটা মাত্র দিয়ে সে-যাত্রা প্রাণ নিয়ে— রাতা-রাতি কাচ্চাবাচ্চ নিয়ে সরে পড়ল বটে কিন্তু ল্যাক্ত তুলে সে দৌড় মারতে পারলে না— এর জন্তে শেয়ালের দলে সে ভারি লজ্জা পেলে । সবাই বললে— এর চেয়ে যে মরাও ভালো ছিল। রত-বুড়ে কাদতে কঁদিতে তার ছেলেকে এসে বললে— তোরই জন্তে আমার এই লাঞ্ছনা! তখন শেয়ালপণ্ডিত গম্ভীর মুখে ভাবতে বসলেন— কী করে সব শেয়ালকে জব্দ করা যায় ! “ছেলেটার অগাধ বুদ্ধি। ভাবতেই তার মাথায় একটা ফন্দি এল। সে চট্‌-করে তার বাপকে সাহেবদের নীল-কুঠিতে নিয়ে এক পোচ নীল রঙ মাখিয়ে কানে ফুস-ফুস করে মস্তর দিয়ে ছেড়ে দিলে । “রতা-শেয়াল ছিল লাল, এখন সে নীল হয়ে বনে ফিরে এসে মহা হৈচৈ বাধিয়ে দিলে— রাজা-উজির মেরে বেড়াতে আরম্ভ করলে ! শেয়াল বলে তাকে আর চেনাই যায় না । মামা ভোম্বল-দাস পর্যন্ত ভয়ে তাকে সিংহাসন ছেড়ে দিতে পথ পান না । কৈলাস-পর্বত থেকে পশুপতি ভোম্বলদাসের বোধ মোর খবর পেয়ে এই নতুন রাজাকে রাজ্য শাসন করতে পঠিয়েছেন— এই কথাই বনে-বনে রাষ্ট্র হয়ে গেল ।

  • মামা একে মামীর শোকে অস্থির, তার উপর সিংহাসন হারিয়ে পাগলের মতো হলেন । এদিকে রতা, যে একদিন মামার চাকর ছিল, মাইনের জন্যে ই-বেলা ভালুক মন্ত্রীর কাছে ধন্না দিত, মারের ভয়ে বাঘা-কোটালের বাড়ি এটো-কঁাটা ফেলে ত্রি-সন্ধণ খেটে মরত, বক-ধার্মিকের জন্তে মাছ কুটে-কুটে হাত খইয়ে ফেলত—

8షిసె