পানে, আর মনে মনে বলে— আকাশকে কেমন করে শুধোই । ওখান থেকে ও কী দেখতে পাচ্ছে ? মাটি শুধোতে পারে ন৷ আকাশকে, সে কী দেখছে ? আকাশ বলতে পারে না মাটিকে সে যা দেখছে ! এইভাবে এ ওর দিকে চেয়েই আছে, দুপুর বেলা সবাই সবার দিকে দেখছে কিন্তু কেউ কিছু বলে না, কয় না ! চুপচাপ থেকে-থেকে গাছের চোখের পাতা ঝিমিয়ে এল, গাছের সার্থী ছাওয়া মাটিতে নেতিয়ে পড়ে, ঘুমের ঘোরে দেয়াল করে বলে উঠল— মাঠের পরে তালগাছ পাহারা দিচ্ছে, তার পর ? ছোটে। গাছ হঠাৎ চট্কা ভেঙে জেগে উঠে বললে— তালগাছটার মাথার উপরে একটা পাখি উড়ছে, যেন ঘুরে ঘুরে কী খুঁজে চলেছে! গাছের ছাওয়া ছোট্টে। একটা নুড়ির উপরে দাড়িয়ে বললে— আমি দেখব । বত। এতক্ষণ চুপ করে ছিল, বলে উঠল— ইস্স্ ! ছোটো গাছ হেসে লুটোপুটি খেতে লাগল। মাঠের শেষে পাহারা দিচ্ছিল যে উচু গাছ সে এইবার মাথা নেড়ে বললে— দেখবেই তো, দেখখেই তো ! লজ্জায় ছোটো গাছের ছাওয়া মাথা হেট করে মাটিতে মিলিয়ে গৈল। সন্ধ্যার আকাশের কোলে দেয়ালা দিচ্ছিল একখানি মেঘ, একবাব সে রঙিন আলোয় রাঙা হয়ে উঠেই সাবার ঘুমিয়ে পড়ল— নীল আকাশের অঁচিলেব আড়ালে। এমন সময় গাছ বলে উঠল— ছাওয়া ! সাড়া নেই । গাছ ফিলে-ফিরে দেখে— ছাওয়া পালিয়েছে । গাছ মাটিকে বললে – ছাওয়া গেল কোথা ? মাঠ বললে— এই তো ছিল, গেল কোথায় ? তালগাছ বললে— ছাওয়ার মতো কে যেন ওই পুব মুখে রোদে পুড়তে পুড়তে চলে গেল আমি দেখেছি। আকাশ বললে— শুধোই তো লোদকে ছাওয়া যায কোন খানে ?
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।