কবিরাজ ছিলেন বিষম গম্ভীর লোক— রাগলেন কিনা বোঝা গেল না ; কিন্তু তিনি কর্তাবাবুর অনেক পীড়াপীড়ি সত্ত্বেও প্রভাকরের নামে কিছুতেই মানহানির মকদম আনতে রাজি না হয়ে গুম্ হয়ে খানিক বসে থেকে বৈঠকখানা ছেড়ে উঠে সোজা বাড়ির দিকে চলে গেলেন দেখা গেল । যেমন রামধনের গীত তেমনি প্রভাকরের খবরটাও দেখতে দেখতে আগুনের মতো পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ল। পাড়ার ছেলেরা কোমর বেঁধে কবিরাজ মশায়কে এসে বললে— বলেন তো রামাকে শিক্ষা দিয়ে আসি, আপনার সঙ্গে লাগে এত বড়ে সাহস তার ! কবিরাজ হেসে বললেন– তোর সব ঘরে যা, এখন ডাক্তারি মালিশের দিন এল, মাস তৈল তো কেউ আর নেবে না, বুট পালিশে যদি লাগে তেলটা লাভ তো কম হবে না বরং বাড়বেই দাম, যা তোরা পাঠশালে যা। এই ঘটনার পর থেকে তিন রাত্রি যেতেই শোনা গেল রামধন তার বুট পরে দাওয়া থেকে উঠোনে নামতে পা পিছলে পড়ে একেবারে খোড়া হয়ে শয্যাগত, উত্থানশক্তি . রহিত, বাড়িতে কান্নাকাটি পড়ে গেছে । ছেলের দল হোরর দিয়ে কবিরাজ মশায়কে এই খবরটা দিতে এসে দেখলে কবিরাজ বাড়িতে নেই, দরজায় এই বি পন অঁাট বড়ো বড়ো করে হাতের লেখায় -– “মাস তৈলের অপব্যবহারে বাতও সারে না হাড়ও ভাঙে এইটুকুই জানিয়া আমি কাশীযাত্রা করিলাম, অপব্যবহারীর গঙ্গাযাত্রার ভার বালকদের উপরে রহিল ।” 88 (t
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।