পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘু্য নিয়ে আমাকে তাদের ক্ষুদে শহরে যাবার হুকুম দিয়ে ছেড়েদিলে । শ্বেত কাকের কথা শুনে পিপড়ের দেশ দেখতে এসে প্রথমটাতেই বড়ো জ্বালাতন হতে হয়েছিল। দেখলেম, এর রাজারাজড়া থেকে কুলিমজুর পর্যন্ত খেটে খেটে মরে শখ ক’রে ; বাবুয়ানার দিক দিয়ে যেতেই চায় না । এদের দেশে শখের জিনিস যথেষ্ট— ভালো ফল ফুল সবই আছে, কিন্তু নিজের এরা সেগুলো ভোগ করতে চায় না একেবারেই। যেদিকে যাই, দেখি দলে-দলে পিপড়ে মালপত্ত্বর রসদ পিঠে করে নামাচ্ছে, ওঠাচ্ছে। মিস্ত্রি মজুর তার মাটির নিচে সব মুড়ঙ্গ চালিয়ে পথ করে দিচ্ছে । পুথিবীর উপরকার ভার কমাতে সবাই এত ব্যস্ত যে আমাকে দেখেও দেখলে না । দেখলেম, এদের মধ্যে একদল আছে তারা দালাল পি পড়ে । তার কোথায় কী মাল আছে তার সন্ধানেই ফিরছে। আর এক দল, তারা যেখানে যা পাচ্ছে কুড়িয়ে নিয়ে জমা করছে। অন্ত দল তারা খুব লুকোনো জিনিস তারই সন্ধানে গিয়ে রাতারাতি, এমন-কি দিনেডাকাতিও করে আসতে ছাড়বে না। এর মুন ছোয় না— কাজেই নিমকহারামি বলে একটা কথা নেই এদের অভিধানে। মুখমিষ্টি জাত বলে এরা জগদবিখ্যাত। চিনি কিংবা চিনি না, এই দুটাে কথা এরা ভারি মান্তি করে । তাই যাকে চিনি না বলে মনে করে এরা, চেনা-চিনি হলেও ফস করে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠত করে না । এতে করে জগৎমৃদ্ধ ই এদের কাছে অপরিচিত ; এক চিনির পুতুলগুলিকেই এরা একটু খাতির করে চলে। এদের ধর্ম আমি যা দেখলেম তাতে এদের ঘোরতর পৌত্তলিক বলতে হয়। এরা ঘরে ঘরে এক-একটা লোহার সিন্দুকের আকারে ছোটে-বড়ো মন্দির খাড়া করে সেখানে সোনা রুপো কোম্পানির কাগজের সিংহাসনে চিনির শেয়ার বলে একটা হাজার হাত মূর্তির পুজো দেয় কেবলই। এই দেবতা কখনো এদের ভক্তিতে বিগলিত হন। তখন মুশকিলে পড়ে পিপড়েরা। ভক্তিতে 8QS)