একদিনও বঁচিতে পারবে না এটা নিশ্চয়। রানীর চলবে না তোমাদের ছাড়া, তোমাদেরও চলবে না রানী না হলে, সেই বুঝেই আমি আমার এই মোমের পুতুলী মেয়েটিকে তোমাদের রানী করে দিলেম, একে তোমরা যত্নে রাখো সুখে রাখো এই আমার ইচ্ছে।’ রানীর বক্তৃতা শুনে প্রজা মৌমাছি সব আনন্দধ্বনি করতে লাগল। নতুন রানী সমবয়সী মৌমাছিদের সঙ্গে একদিকে আমোদ আল্লাদ করতে চলে গেলে পর নবাবপুত্ত্বর বুডো রানীর কাছে গিয়ে বললে—‘রানীমা, প্রজাপতি আমাকে মধু সংগ্রহ করবার মতো বিস্তেবুদ্ধি কিছুই দেন নি। কিন্তু আমি বেশ গুছিয়ে সংসার করতে মজবুত। যদি অল্পসল্প যৌতুক আর দানসামগ্রী দিয়ে কোনো একটা কালো-কোলো মেয়েকে পার করবার ইচ্ছে থাকে তবে আমি খুশি হয়ে তাকে নিতে রাজি আছি । আর—’ রানীর প্রিয় সখী তার কথায় বাধা দিয়ে বলে উঠল— ‘রাজকুমার, তুমি জানো না— এ দেশের রানীর সোয়ামীর কপাল বড়োই মন্দ হয়। তাকে এর একটা উৎপাত বলেই মনে করে আর সেইজন্য আদরযত্ন করে না, রাজকার্যে তার কোনো কথা চলে না এবং কতকটা বয়সের বেশি আমরা তাকে কিছুতে বাঁচতে দিই নে। কাজেই ভেবে দেখ এ দেশের রানীর জামাই হতে চাও কি না।’ বুড়ে রানী বলে উঠলেন– ‘কোনো ভয় নেই, আমি তোমার পক্ষে রইলেম, তুমি আমার কাছে থাকে । তুমি দেখছি বড়ো-ঘরের ছেলে, আর তোমার মন যখন হয়েছে তখন আমার এক মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ে দেব, তুমি আমার রাজত্বে ভালোই করবে বলে বিশ্বাস হচ্ছে । এসো ।” যত নবাব একেবারে নিবুদ্ধি ছিল না । সে বেছে বেছে সবচেয়ে সুন্দরী রাজকন্যার প্রেমে পড়ে গেল। অজানা মৌমাছি সে কোন দেশ থেকে উড়ে এসে সুন্দরী মক্ষীরানীর কন্তের রূপের আলোর মধ্যে ঘুরে ফিরে কন্তের সঙ্গে এক ফুলে মধু খেয়ে ছায়ার মতো তার পিছে পিছে ফিরে শেষে তার হৃদয়টি অধিকার করে নিলে। মৌমাছির 8vo
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।