দাও, আমি বল্লভপুরে ফিরে যাই, আমার প্রাণ কেমন করছে, বুঝিবা সেখানে সর্বনাশ ঘটল । রাজরানী বললেন—আর কট দিন থেকে যা, ছেলেটি হয়ে যাক। পুষ্পবতী বললেন—ন, না, না, মা !? সেইদিন সন্ধ্যাবেল বল্লভপুরের আশিজন রাজপুত বীর, আর দুটে উটের পিঠে নীল রেশমী-মোড়া একখানি ছোটো ডুলি, বড়ো রাস্তা ধরে বল্লভপুরের দিকে চলে গেল। চন্দ্রাবতীর রাজপ্রাসাদ শূন্ত করে রাজকুমারী পুষ্পবতী বিদায় নিলেন। চন্দ্রাবতী থেকে বল্লভপুর যেতে হলে প্রকাণ্ড একটা মরুভূমি পার হতে হয়। মালিয়া-পাহাড়ের নিচে বীরনগর পর্যন্ত চন্দ্রাবতীর পাকা রাস্তা, তারপর মরুভূমির উপর দিয়ে আগুনের মতো বালি ভেঙে, উটে চড়ে বল্লভপুরে যেতে হয়, তার অন্য পথ নেই । পুষ্পবতী সেই পথের শেষে মরুভূমির সম্মুখে এসে শুনতে পেলেন যে, শিলাদিত্য আর নেই। বিধর্মী স্লেচ্ছ বল্লভপুর ধ্বংস করেছে । পুষ্পবতীর চোখে এক ফোটা জল পড়ল না, তার মুখে একটিও কথা সরল না, কেবল র্তার বুকের ভিতরটা সম্মুখের সেই মরুভূমির মতো ধূ-ধূ করতে লাগল ; তিনি লক্ষ লক্ষ টাকার হারের গহন গা থেকে খুলে বলির উপর ছড়িয়ে দিলেন, সিথির সি দুর মুছে ফেললেন । তারপর উদাস প্রাণে বিধবার বেশ ধরে শিলাদিত্যের আদরের মহিষী পুষ্পবতী সন্ন্যাসিনীর মতে সেই মালিয়া-পাহাড়ের প্রকাগু গহবরে আশ্রয় নিলেন । মরুপারে দশমাস দশদিন পূর্ণ হলে সন্ন্যাসিনী রানীর কোলে অন্ধকার গুহায়, রাজপুত্রের জন্ম হল। নাম রইল গোহ। রানী পুষ্পবতী সেইদিন বীরনগর থেকে তার ছেলেবেলার প্রিয়সখী ব্রাহ্মণী কমলাবতীকে ডেকে পাঠিয়ে সেই আশিজন রাজপুত বীরের সম্মুখে তার বড়ো সাধের রাজপুত্র গোহকে সঁপে দিয়ে বললেন–প্রিয় সখী, তোমার হাতে আমার গোহকে সঁপে দিলুম, তুমি মায়ের মতো একে মানুষ কোরো। তোমায় আর ჯზr
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।