পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একবার যে পাহাড়ে মহারাজ শিকারে গিয়েছেন, সেইদিকে চেয়ে দেখছিলেন ! এক সময় হঠাৎ পাহাড়ের দিকে একটা গোলমাল উঠল, তারপর রানী দেখলেন, সেই পাহাড়ে-রাস্তায়, বনের অন্ধকার থেকে, মহারাজের কালো ঘোড়াটি তীরের মতো ছুটে বেরিয়ে ঝড়ের মতো কেল্লার দিকে ছুটে আসতে লাগল— পিছনে তার শত-শত ভীল—কারো হাতে বল্লম, কারে হাতে বা তীরধনুক ! মহারানী দেখলেন, কালো ঘোড়ার মুখ থেকে শাদা ফেন চারিদিকে মুক্তোর মতো ঝরে পড়ছে, তার বুকের মাঝ থেকে রক্তের ধারা রাস্তার ধূলোয় ছড়িয়ে যাচ্ছে ; তারপর দেখলেন, আগুনের মতো একটি তীর তার কালো-চুলেব ভিতর দিয়ে ধনুকের মতো তার সুন্দর বাকা ঘাড় সজোরে বিধে ঘোড়াটিকে মাটির সঙ্গে গেথে ফেলল ; রাজব ঘোড় কেল্লার দিকে মুখ ফিরিয়ে ধুলোর উপব ধড়ফড় করতে লাগল। ঠিক সেই সময় মহারানীর মাথার উপর দিয়ে একটা বল্লম শনশন শব্দে কেল্লার ছাদের উপর এসে পড়ল। রাজমহিষী ঘুমন্ত বাপ্পাকে ওড়নার আড়ালে ঢেকে তাড়াতাড়ি উপর থেকে নেমে এলেন। চারিদিকে অস্ত্রের ঝনঝনি আর যুদ্ধের চিৎকার উঠল—স্বর্যদেব মালিয়া-পাহাড়ের পশ্চিম পারে অস্ত গেলেন । সে রাত্রি কী ভয়ানক রাত্রি! সেই মালিয়া-পাহাড়ের উপর অসংখ্য ভীল, আর মাঝে গুটিকতক বাজপুত প্রাণপণে যুদ্ধ করতে লাগলেন ; আর অন্ধকার রাজপুরে নাগাদিত্যের বিধবা মহিষী পাচ বৎসরের রাজকুমার বাপ্পাকে বুকে নিয়ে নির্জন ঘরে বসে রইলেন! তিনি কতবার কত দাসীর নাম ধরে ডাকলেন—কারো সাড়া-শব্দ নেই। মহারাজের খবর জানবার জন্তা-তিনি কতবার কত প্রহরীকে চিৎকার করে ডাকলেন, কিন্তু তারা সকলেই যুদ্ধে ব্যস্ত, মহারানীর ঘরের ভিতর দিয়ে ছুটে গেল, তবু তার কথায় কর্ণপাতও করলে না ! রানী তখন আকুল হৃদয়ে কোলের বাপ্পাকে ছোটাে একখানি উটের কম্বলে ঢেকে নিয়ে অন্দরমহলের চন্দনকাঠের প্রকাণ্ড দরজা সোনার "לף