এই রকম তামাশাও করতেন মাঝে মাঝে । রবিকাকারও এই রকম তামাশা করবার অনেক গল্প আছে। কর্তাদাদামশায় নিজেও দুধ ক্ষীর পায়েস এই-সব খেতে বরাবরই ভালোবাসতেন। শেষ দিকেও দেখেছি, বড়ে একটা কাচের বাটি ছিল সেটা ভরতি তিনি ঘন জাল-দেওয়া দুধ খেতেন রোজ । একদিন কী করে বাটিটা ভেঙে যায়। বড়োপিসিমা তখন র্ত্যর সেবা করতেন, তিনি বাজার থেকে যত রকমের কাচের বাটিই আনান, কর্তাদাদামশায়ের পছন্দ আর হয় না। ঠিক তেমনটি আর পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও । কোনোটা হয় বড়ো, কোনোট হয় ছোটো। ঠিক সেই মাপের চাই । আবার পাতলা কাচের হলেও চলবে না। একবার কর্তাদাদামশায়ের শরবত খাবার কাচের গ্লাসটি ভেঙে যায়। দীপুদা শখ করে সাহেবি দোকান অসলার কোম্পানি থেকে পাতলা কাচের গ্লাস এক ডজন কিনে আনলেন কর্তাদাদামশায়ের শরবত খাবার জন্য । কর্তাদাদামশায় বললেন, এ কী মাস। শরবৎ খাবার সময়ে আমার দাতু লেগেই যে ভেঙে যাবে। সে গ্লাস চলল না— দীপুদাই বকশিশ পেলেন। তার পর বোম্বাই থেকে চার দিকে গোল-গোল পল-তোলা পুরু বোম্বাই গ্লাস এল, তবে কর্তাদাদামশায় তাতে শরবৎ খেয়ে খুশি । বড়োপিসিম একদিন আমাকে বললেন, অবন, তুই তো নানা জায়গায় ঘুরিস, দেখিস'তো, কোথাও যদি ওরকম একটি বাটি. পাস বাবামশায়ের দুধ খাবার জন্য । একদিন গেলুম আমার জানাশোনা কয়েকটি লোক নিয়ে মুগিহাটায়। ভাবলুম বিলিতি জিনিস তো কর্তাদাদামশায়ের পছন্দ হবে না, দেশীও তেমন ভালো নেই— মুর্গিহাটায় গিয়ে খোজ করলুম পার্শিয়ান কাচের বাটি আছে কি না । ভাবলুম, ওরকম জিনিস কর্তাদাদামশায়ের পছন্দ হতে পারে। বেশ নতুন ধরনের হবে। সেখানকার লোকেরা বললে, আমাদের কাছে তে সে-সব জিনিস থাকে না । তারা আমাকে নিয়ে গেল চীনেবাজারের গলিতে এক নাখোদ সওদাগরের বাড়িতে। গলির মধ্যে বাড়ি বুঝতেই পার কেমন, ঢুকলুম তার ঘরে । ঢুকে মনে হল যেন আরব্য উপন্যালের সিন্ধবাদের ঘরে ঢুকলুম, এমনিভাবে ঘর সাজানে। ঘরজোড়া ফরাশ পাতা, ধবধব, করছে, চার দিকে রেলিং-দেওয়া চওড়া মঞ্চ, তাতে বসে ছকে খায়। গড়গড় ও নানা রকমের টুকিটাকি জিনিস, খুব যে দামী কিছু তা নয়, কিন্তু কী সুন্দর ভাবে সাজানো সব। লোকটি আদর > a
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১০৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।