অভ্যর্থনা করে ফরাশে নিয়ে বসালে, চা খাওয়ালে। চ ট খাওয়ার পর তাকে বললুম, একটি বেলোয়ারি বড়ো বাটি কর্তার দুধ খাবার জন্য দিতে পারো ? সে বললে, আজকাল তো সে-সব পুরোনো জিনিস এ দিকে আসে না বড়ে, তবে আমার গুদোমঘরটা একবার দেখাতে পারি, যদি কিছু থাকে। গুদোমঘর খুলে দিলে, যেমন হয়ে থাকে গুদোমঘর, হরেক জিনিসে ঠাসা— তার মধ্যে হঠাৎ নজরে পড়ল একটি বেশ বড়ো পাশিয়ান ক্রিস্টেলের বাটি, শাদা ক্রিস্টেলের উপর গোলাপী ক্রিস্টেলের ফুলের নকশা। চমৎকার বাটিট, ঠিক যেমনটি চেয়েছিলুম। তার আরো দুটো ক্রিস্টেলের জিনিস ছিল, একটা ছকে। আর একটা গোলাপপাশ, সবুজ রঙ নবদুৰ্বোর মতে, তায় উপরে সোনালি কাজ করা। সব কয়টাই নিয়ে এলুম। ভাবলুম, কর্তাদাদামশায় আর এ-দুটো দিয়ে কী করবেন–র্তার বাটির কল্যাণে আমারও দুটো জিনিস পাওয়া হবে। বড়ো বাটিটি পিসিমার পছন্দ হল ; বললেন, এইবার বোধ হয় ঠিক পছন্দ করবেন, কাল খবর পাবে। পরদিন তাই হল, বাটিটি পেয়ে কর্তাদাদামশায় খুব খুশি, আর বললেন– এ হু কো আর গোলাপপাশ আমায় দরকার নেই, তুমিই নাও গে। বড়ো চমৎকার জিনিস দুটো, অনেকদিন ছিল আমার কাছেই । তা, ওই বাটিটিতে উনি শেষকাল পর্যন্ত রোজ দুধ খেতেন। তিনি আমাদের মতো বাটির কানী এক হাতে ধরে দুধ খেতেন না । বড়োপিলিমা দুধের বাটি নিয়ে এলেই অঞ্জলি পেতে ছ হাতের মধ্যে বাটিটি নিয়ে মুখে তুলে দুগ্ধ পান করতেন । বাটির নীচে একটা ন্যাপকিন দেওয়া থাকত— যাতে হাতে গরম না লাগে। যখন মেয়ের কাছ থেকে অঞ্জলি পেতে বাটিটি নিতেন কী স্বন্দর শোভা হত। তার হাত দুখানিও ছিল বেশ বড়ো বড়ে ; তাই হাতের মাপসই বাটি নইলে তার ভালে লাগত না । কর্তাদাদামশায়ের গোরু রোজ গুড় খেত। বড়োপিসিমার উপরেই এই ভার ছিল, রোজ তিনি গোরুকে গুড় খাওয়াতেন। গোরু গুড় খেলে কী হবে ? গোরুর দুধ মিষ্টি হবে । নীপুদা বলতেন, দেখছিল কাও, আমরা গুড় খেতে পাই নে একটু লুচির সঙ্গে, আর কর্তাদাদামশায়ের গোরু দিব্যি কেমন রোজ গাদ গাদা গুড় খাচ্ছে । আমি নাতি হয়ে জন্মেও কিছুই করতে পারলুম না । দীপুদার কথা ছিল সব এমনিই, বেশ রসালে করে কথা বলতেন । কর্তাদাদামশায় এ দিকে আবার পিটপিটেও ছিলেন খুব । একবার তার S )
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১০৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।