পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরীর খারাপ হয়েছে, সাহেব ডাক্তার এসেছেন দেখতে, ডাক্তার সগুার্স, তিনি আমাদের ফ্যামিলি ডাক্তার। ডাক্তার এসে তো দেখে শুনে গেলেন । যাবার সময়ে কর্তাদাদামশায়ের সঙ্গে শেকৃহাণ্ড করে গেলেন যেমন যান বরাবর। কর্তাদাদামশায়ও থ্যাঙ্ক, ইউ ডাক্তার’ বলে হাত বাড়িয়ে দিলেন । এ হচ্ছে দস্তুর, ভদ্রতা, এ বাদ যাবার জো নেই । ডাক্তারও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন, আমরা দেখি কর্তাদাদামশায়ের হাত আর নামে না। যে হাত দিয়ে শেকৃহাণ্ড করেছিলেন সেই হাতখানি টান করে বাইরে ধরে আছেন হাতের পাচটা আঙুল ফাক করে। দীপুদা বললেন, হল কী। কর্তাদাদামশায়ের হাত আর নামে না কেন, শক-টক লাগল নাকি । চাকররা জানত, তারা তাড়াতা ড্র ফিংগারবোলে করে জল এনে কর্তাদাদামশায়ের হাতের কাছে এনে ধরতেই তার মধ্যে আণ্ডল ডুবিয়ে ভালো করে ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে বেশ করে মুছে তবে ঠিক হয়ে বসলেন। কর্তাদাদামশায়ের কী স্বন্দর শরীর আর স্বাস্থ্য ছিল তার একটা গল্প বলি শোনো ৷ এ বার যখন উনি চুচড়োর বাগানবাড়িতে, হঠাৎ কী যেন ওঁর খুব কঠিন অসুখ হয় । এখানে আনবার সাধ্য নেই এমন অবস্থা । এ-বাড়ি থেকে সবাই রোজ যাওয়া-আসা করছেন । ডাক্তার নীলমাধব আরো কে কে কৰ্তাদাদামশায়ের দেখাশোনা করছেন, চিকিৎসাদি হচ্ছে। হতে হতে একদিন কর্তাদাদামশায়ের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়ে। এমন খারাপ যে ডাক্তাররা আশ। ছেড়ে দিয়ে নীচের তলায় এসে বসে রইলেন । শেষ অবস্থা, এ-বাড়ির বড়োর সবাই সেখানে— আমরা ছেলেমাতুষ, আমাদের যাওয়া বারণ। কর্তাদাদামশায়ের খাটের চার পাশে সবাই দাড়িয়ে। কী করে যেন সে সময়ে আবার কর্তাদাদামশায়ের খাটের মশারিতে আগুন ধরে যায়— বাতি থেকে হবে হয়তো । ন-পিসেমশাই জানকীনাথ সেই মশারি টেনে ছিড়ে খুলে ফেলে অন্য মশারি টাঙিয়ে দেন। কর্তাদাদামশায় তখন অসান অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন । সবাই তো দাড়িয়ে আছে, আর আশা নেই। এমন সময়ে ভোর-রাত্তিরে, যে সময়ে উনি রোজ উঠে উপাসনা করতেন, কর্তাদাদামশায় এক বটকায় সোজ। হয়ে উঠে বসলেন বিছানার উপরে। উঠে বসেই বললেন, শাস্ত্রীকে ডাকে । প্রিয়নাথ শাস্ত্রী কাছেই ছিলেন, ছুটে সামনে এলেন । ॐ २