কর্তাদাদামশায়ের দেহ হয়ে গেছে যেন চন্দনকাঠের সার। তখন ওই একটিই পুরোনো ঘোরানো সিড়ি ছিল উপরে উঠবার। আমরা বাড়ির ছেলেরা সবাই মিলে তার দেহ ধরাধরি করে তো অতিকষ্টে সেই ঘোরানো সিড়ি দিয়ে নীচে নামালুম। শাদা ফুলে ছেয়ে গিয়েছিল চার দিক । সেই ফুলে সাজিয়ে আমরা র্তার দেহ নিয়ে চললুম শ্মশানে, রাস্তায় ফুল আবীর ছড়াতে ছড়াতে । রাস্তার দু ধারে লোক ভেঙে পড়েছিল। আস্তে আস্তে চলতে লাগলুম। দীপুদা ঠিক করলেন, নিমতলার শ্মশানঘাট ছাড়িয়ে খোলা জায়গায় গঙ্গার পাড়ে কর্তাদাদামশায়ের দেহ দাহ করা হবে । এ পারে চিতে সাজানো হল চন্দন কাঠ দিয়ে, ও পারে সূর্যাস্ত, আকাশ সেদিন কী রকম লাল হয়েছিল – যেন সি দুরগোল । রবিকাকার মুখাগ্নি করলেন, চিতে জলে উঠল । একটু ধোয় না, কিছু না, পরিষ্কার আগুন দাউ দাউ করে জলতে লাগল, বাতাসে চন্দনের সৌরভ ছড়িয়ে গেল। কী বলব তোমাকে, সেই আগুনের ভিতর দিয়ে অনেকক্ষণ অবধি কৰ্তাদাদামশায়ের চেহারা, লস্ব শুয়ে আছেন, ছায়ার মতে দেখা যাচ্ছিল । মনে হচ্ছিল যেন লক্লকে আগুনের শিখাগুলি তাকে স্পর্শ করতে ভয় পাচ্ছে । তার চার দিকে সেই আগুনের শিখা যেন ঘুরে ঘুরে নেচে বেড়াতে লাগল। দেখতে দেখতে সেই শিখা উগরে উঠতে উঠতে এক সময়ে দপ করে নিবে গেল, এক নিশ্বাসে সব-কিছু মুছে নিলে। ও পারে স্বর্য তখন অস্ত গেল । ” 8 সেকালের কর্তাদের গল্প শুনলে, এবারে দিদিমাদের গল্প কিছু শোমো । আমার নিজের দিদিমা, গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার, নাম যোগমায়া, র্তাকে আমি চোখে দেখি নি । তার গল্প শুনেছি —— মী, বড়োপিসিম, ছোটপিসিমা— কাদম্বিনী, কুমুদিনীর কাছে । বড়োপিসিমা বলতেন, আমার মার মতে অমন রূপসী সচরাচর আর দেখা যায় না। কী রঙ, যাকে বলে সোনার বর্ণ। মা জল খেতেন, গলা দিয়ে জল নামত স্পষ্ট যেন দেখা যেত , পাশ দিয়ে চলে গেলে গ দিয়ে যেন পদ্মগন্ধ ছড়াত। দিদিমার কিছু গয়ন আমার কাছে আছে এখনো, সিখি, তীরেমুক্তে-দেওয়া কানঝাপটা ৷ মা おけr
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।