পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকতেন ; তাই তাদের নিজেদের মধ্যে বেশ একটা টান ছিল । আমার মা এলেন, শেষ এলেন রগীর মা ; ওই শেষ যশোরের মেয়ে এলেন এ বাড়িতে । মা প্রায়ই বলতেন, বেশ হয়েছে, আমাদের যশোরের মেয়ে এল ! এই কথা যখন বলতেন তাতে যেন বিশেষ আদর মাখানে থাকত । কর্তাদিদিমাও রূপসী ছিলেন, কিন্তু ওই ছবি দেখে কে বলবে । ছবিটা যেন কেমন উঠেছে। দীপুদা ওই ছবি দেখে বলতেন, আচ্ছা, কর্তাদাদামশায় কী দেখে কর্তাদিদিমাকে বিয়ে করেছিলেন হে । তখন ১১ই মাঘে খুব ভোজ হত – পোলাও, মেঠাই । সে কী মেঠাই, যেন এক-একটা কামানের গোল। পেয়েদেয়ে সবাই আবার মেঠাই পকেটে করে নিয়ে যেত। অনেক লোকজন অতিথি-অভ্যাগতের ভিড় তত সে সময়ে । আমরা ছেলেমানুষ, আমাদের বাইরে নিমন্ত্রিতদের সঙ্গে পাবার নিয়ম ছিল না। বাড়ির ভিতরে একেবারে কর্তাদিদিমার ঘবে নিয়ে যেত আমাদের । সঙ্গে থাকত রামলাল চাকর । আমুর স্পষ্ট মনে আছে কর্তাদিদিমার সে ছবি, ভিতর দিকের তেতলাব ঘরটিতে থাকতেন। ঘরে একটি বিছানা, সেকেলে মশারি সবুজ রঙের, পঙ্গব কাজ করা মেঝে, মেঝেতে কাপে ট পাত, এক পাশে একটি পিদিম জলছ – বালুচর শাড়ি পরে শাদ চুলে লাল সিদ্ধর টঙ্কটক্‌ করছে – কর্তাদিদিম বস আছেন তক্তপোশে । রামলাল শিখিয়ে দিত, আমরা কর্তাদিদিমাকে পেন্নাম করে পাশে দাড়াতুম ; তিনি বলতেন, আয়, বোস বোস । এতকালের ঘটনা কী করে যে মনে আছে, স্পষ্ট যেন দেখতে পাচ্ছি, বলে তো ছবি একেও দেখাতে পারি। এত মনে আছে বলেই এখন এত কষ্ট বোধ করি এখনকার সঙ্গে তুলনা করে। কর্তাদিদিমা রামলালের কাছে সব তন্ন তন্ন করে বাড়ির খবব নিতেন । তিনি ডাকতেন, ও বউমা, ওদের এখানেই আমার সামনে জায়গা করে দিতে বলো । বউমা হচ্ছেন দীপুদার মা, আমরা বলতুম বড়ামা । সেই ঘরেই এক পাশে আমাদের জন্য ছোটো ছোটে আসন দিয়ে জায়গা হত। কর্তাদিদিমার বড়োবউ, লাল চওড়া পাড়ের শাড়ি পর – তখনকার দিনে চওড়া লালপেড়ে শাড়িরই চলন ছিল বেশি, মাথায় আধ হাত ঘোমটা টানা, পায় আলতা, > o X