বেশ ছোটোখাটাে রোগা মানুষটি। কয়েকখানি লুচি, একটু ছোক, কিছু মিষ্টি যেমন ছোটোদের দেওয়া হয় তেমনি দু হাতে দুখানি রেকাবিতে সাজিয়ে নিয়ে এলেন । কর্তাদিদিম কাছে বসে বলতেন, বউমা, ছেলেদের আরো খানকয়েক লুচি গরম গরম এনে দাও, আরো মিষ্টি দাও । এই রকম সব বলে বলে খাওয়াতেন, বড়োদের মতো আদরযত্ব করে । আমরা খাওয়াদাওয়া করে পায়ের ধুলো নিয়ে চলে আসতুম | কর্তাদিদিমার একটা মজার গল্প বলি, যা শুনেছি। বড়োজ্যাঠামশায়ের বিয়ে হবে । কর্তাদিদিমার শখ হল একটি খাট করাবেন, দ্বিজেন্দর আর বউমা শোবে । রাজকিষ্ট মিস্ত্রিকে আমরাও দেখেছি — তাকে কর্তাদিদিমা মতলব মাফিক সব বাৎলে দিলেন, ঘরেই কাঠকাটরা আনিয়ে পালঙ্ক প্রস্তুত হল। পালঙ্ক তো নয়, প্রকাগু মঞ্চ । খাটের চার পায়ার উপরে পর ফুলদানি ধরে আছে ; খাটের ছত্রীর উপরে এক শুকপক্ষী ডানা মেলে । রূপকথা থেকে বর্ণনা নিয়ে করিয়েছিলেন বোধ হয় । ঘরজোড়া প্রকাণ্ড ব্যাপার, তার মতলবমাফিক খাট । কত কল্পনা, নতুন বউটি নিয়ে ছেলে ওই খাটে ঘুমোবে, উপরে থাকবে শুকপক্ষী । কর্তাদিদিমার এক ভাই জগদীশমামা এখানেই থাকতেন ; তিনি বললেন, দিদি, উপরে ওটা কী করিয়েছ, মনে হচ্ছে যেন একটা শকুনি ডানা মেলে বস আছে । 酸 আর, সত্যিও তাই। শুকপাখিকে কল্পনা করে রাজকিষ্ট মিস্ত্রি একট। কিছু করতে চেষ্টা করেছিল, সেটা হয়ে গেল ঠিক জার্মান ঈগলের মতে, ডানামেলা প্রকাণ্ড এক পাখি । তা, কর্তাদিদিমা জগদীশমামাকে অমনি তাড়া লাগালেন, যা যা, ও তোরা বুদ্ধবি নে। শকুনি কোথায়, ও তো শুকপক্ষী । সেই পাট বহুকাল অবধি ছিল, দীপুদাও সেই খাটে ঘুমিয়েছেন। এখন কোথায় যে আছে সেই খাটটি, আগে জানলে দু-একটা পরী পায়ার উপর থেকে খুলে আনতুম। সাত সাত ছেলে কর্তাদিদিমার ; তাকে বলা হত রত্নগর্ভা । কর্তাদিদিমার সব ছেলেরাই কী সুন্দর আর কী রঙ ! তাদের মধ্যে রবিকাকাই হচ্ছেন কালে । কর্তাদিদিমা খুব কষে তাকে রূপটান সর ময়দ মাখাতেন। সে কথা రి ఇ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।