পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাটোর বললেন, কোথায় স্নান করবে অবনদ, পুকুরে ? আমি বললুম, ন দাদ, সাতার-টাতার জানি নে, শেষটায় ডুবে মরব। তার উপর যে ঠাণ্ড জল, আমি ঘরেই চান করব । চান-টান সেরে ধুতিপাঞ্জাবি পরে বেশ ঘোরাঘুরি করতে লাগলুম। আমরা ছোকরার দল, আমাদের তেমন কোনো কাজকর্ম ছিল না। রবিকাকাদের কথা আলাদা। খাওয়াদাওয়া, ধুমধাম, গল্প-গুজব – রবিকাকা ছিলেন – গানবাজনাও জমত খুব । নাটোরও ছিলেন গানবাজনায় বিশেষ উৎসাহী। তিনিই ছিলেন রিসেপশন কমিটির প্রেসিডেণ্ট । কাজেই তিনি সব ক্যাম্পে ঘুরে ঘুরে খবরাখবর করতেন ; মজার কিছু ঘটনা থাকলে আমাদের ক্যাম্পে এসে খবরটাও দিয়ে যেতেন। খুব জমেছিল আমাদের । রাজস্থখে আছি। ভোরবেল বিছানায় শুয়ে, তখনোও চোখ খুলি নি, চাকর এসে হাতে গড়গড়ার নল গুজে দিলে । কে কখন তামাক খায়, কে দুপুরে এক বোতল সোডা, কে বিকেলে একটু ভাবের জল, সব-কিছু নিখুত ভাবে জেনে নিয়েছিল, – কোথাও বিন্দুমাত্র ক্রটি হবার জে নেই। খাওয়া-দাওয়ার তে কথাই নেই। ভিতর থেকে রাণীমা নিজের হাতে পিঠেপায়েস করে পাঠাচ্ছেন। তার উপরে নাটোরের ব্যবস্থায় মাছ মাংস ডিম কিছুই বাদ যায় নি, হালুইকর বসে গেছে বাড়িতেই, নানা রকমের মিষ্টি করে দিচ্ছে এবেল ওবেলা । আমি ঘুরে ঘুরে নাটোরের গ্রাম দেখতে লাগলুম – কোথায় কী পুরোনো বাড়ি ঘর মন্দির ৮ সঙ্গে সঙ্গে স্কেচ করে যাচ্ছি। অনেক স্কেচ করেছি সেবারে, এখনো সেগুলি আমার কাছে আছে। চাইদেরও অনেক স্কেচ করেছি ; এখন সেগুলি দেখতে বেশ মজা লাগবে । নাটোরেরও খুব আগ্রহ, সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন একেবারে অন্দরমহলে রাণী ভবানীর ঘরে। সেখানে বেশ স্বন্দর সুন্দর ইটের উপর নানা কাজ কর । ওঁর রাজত্বে যেখানে যা দেখবার জিনিস ঘুরে ঘুরে দেখাতে লাগলেন। আর আমি স্কেচ করে নিচ্ছি, নাটোর তো খুব খুশি । প্রায়ই এটা ওটা স্কেচ করে দেবার জন্য ফরমাশও করতে লাগলেন। তা ছাড়া আরো কত রকমের খেয়াল – শুধু আমি নয়, দলের যে যা খেয়াল করছে, নাটোর তৎক্ষণাৎ তা পূরণ করছেন। ফুতির চোটে আমার সব অদ্ভুত খেয়াল মাথায় আসত। একদিন খেতে খেতে বললুম, কী সন্দেশ খাওয়াচ্ছেন নাটোর, টেবিলে আনতে আনতে ঠাণ্ড হয়ে Σ' ο 5'