পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেবার মেজোজ্যাঠামশায় বিলেত থেকে ফিরে এসেছেন, বাল্মীকিপ্রতিভা অভিনয় হবে। এবারে একটু অদল-বদল হয়ে গেল। হ, চ. হ, এলেন সেবারে, তার উপরে ভার পড়ল স্টেজ সাজাবার। কোখেকে দুটো তুলোর বক কিনে এনে গাছে বসিয়ে দিলেন, বললেন, ক্রৌঞ্চমিথুন হল । খড়ভরা একটা মর হরিণ বনের এক কোণে দাড় করিয়ে দিলেন, সিন আঁকলেন কচুবনে বন্য বরাহ লুকিয়ে আছে, মুখটা একটু দেখা যাচ্ছে। সেটা বরাহ কি ছাগল ঠিক বোঝা যায় না। আর বাগান থেকে বটের ডালপালা এনে লাগিয়ে দিলেন। রবিকাক 'জীবনস্মৃতিতে পুকুরধারে যে বটগাছের কথা লিখেছেন তা পড়েছ তো ? সেই বটগাছ আধখানা হয়ে গেল বারে বারে বাল্মীকিপ্রতিভার স্টেজের সাজ জোগাড়ে। যখনই স্টেজ হত, বেচার বটগাছের উপরে কোপ, তার পরে যেটুকু বাকি ছিল একদিন বড়ে সেটুকুও গেল পুবদিকের আকাশ শূন্ত করে। এই রকম তখনকার স্টেজ, আর রবিকাক তাতে প্লে করেছেন। ভেবে দেখো কাগুট । তার পর বাল্মীকিপ্রতিভার গান একটু ভেঙেটেঙে 'কালমৃগয়া" হল। জ্যোতিকাকা সাজলেন রাজা দশরথ, রবিকাকা অন্ধমুনি, ঋতু অন্ধমুনির ছেলে। এই কালমৃগয়াতে প্রথম বনদেবীর পার্ট শুরু হয়। ছোটো ছোটো মেয়ে যারা গাইতে পারে তারা বনদেবী সেজে স্টেজে নামত, ঘুরে ঘুরে গান করত। তখন নাচ-টাচ ছিল না তোমাদের মতো দুমদাম করে। ওই হাতমুখ নেড়ে গান পর্যন্তই। সেবারে জ্যোতিকাকামশায়ের সত্যিকারের একটা পোষা হরিণ বের করে দেওয়া হল স্টেজে। তখনো স্টেজসজ্জায় আমাদের হাত পড়ে নি । রবিকাকার বিয়ে আর হয় না ; সবাই বলেন ‘বিয়ে করে।— বিয়ে করে। এবারে, রবিকাকা রাজী হন না, চুপ করে ঘাড় হেঁট করে থাকেন। শেষে তাকে তো সবাই মিলে বুঝিয়ে রাজী করালেন। রথীর মা যশোরের মেয়ে। তোমরা জানো ওঁর নাম মৃণালিনী, তা বিয়ের পরে দেওয়া নাম। আগের নাম কী একটা স্বন্দরী না তারিণী দিয়ে ছিল, মা তাই বলে ডাকতেন । সেকেলে বেশ নামটি ছিল, কেন যে বদল হল। খুব সম্ভব, যতদূর এখন বুঝি, রবিকাকার নামের সঙ্গে মিলিয়ে মৃণালিনী নাম রাখা হয়েছিল। গায়ে হলুদ হয়ে গেল। অষ্টিবুড়োভাত হবে। তখনকার দিনে ও-বাড়ির ృ\99