পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোনো ছেলের গায়ে হলুদ হয়ে গেলে এই বাড়িতে তাকে নেমস্তন্ন করে প্রথম আইবুড়োভাত খাওয়ানো হত। তার পর এ-বাড়ি ও-বাড়ি চলত কয়দিন ধরে আইবুড়োভাতের নেমস্তয় । মা গায়ে হলুদের পরে রবিকাকাকে আইবুড়েভাতের নেমস্তন্ন করলেন। মা খুব খুশি, একে যশোরের মেয়ে, তায় রর্থীয় মা মর সম্পকের বোন। খুব ধুমধামে খাওয়ার ব্যবস্থা হল। রবিকাকা খেতে বসেছেন উপরে, আমার বড়োপিসিম কাদম্বিনী দেবীর ঘরে, সামনে আইবুড়োভাত সাজানো হয়েছে— বিরাট আয়োজন । পিসিমারা রবিকাকাকে ঘিরে বসেছেন, এ আমাদের নিজের চোখে দেখা । রবিকীক দৌড়দার শাল গায়ে, লাল কী সবুজ রঙের মনে নেই, তবে খুব জমকালো রঙচঙের। বুঝে দেখে, একে রবিকাকা, তায় ওই সাজ, দেখাচ্ছে যেন দিল্লির বাদশা ! তখনই ওঁর কবি বলে খ্যাতি, পিসিমার জিজ্ঞেস করছেন, কী রে, বউকে দেখেছিস, পছন্দ হয়েছে ? কেমন হবে বউ ইত্যাদি সব । রবিকাকা ঘাড় হেঁট করে বসে একটু করে খাবার মুখে দিচ্ছেন, আর লজ্জায় মুখে কথাটি নেই। সে মূর্তি তোমরা আর দেখতে পাবে না, বুঝতেও পারবে না বললে— ওই আমরাই যা দেখে নিয়েছি । বিয়ে বোধ হয় জোড়াসাকোতেই হল, ঠিক মনে পড়ছে না। বাসিবিয়ের দিন খবর এল সারদাপিসেমশায় মারা গেছেন। বাস, সব চুপচাপ, বিবাহের উৎসব ঠাণ্ড । কেমন একটা ধাক্কা পেলেন, সেই সময় থেকেই রবিকাকার সাজসজ্জা একেবারে বদলে গেল। শুধু একখানা চাদর গায়ে দিতেন, বাইরে যেতে হলে গেরুয়া রঙের একটা আলখাল্লা পরতেন। মাছমাংস ছেড়ে দিলেন, মাথায় লম্বা লম্বা চুল রাখলেন। সেই চুল সেই সাজ আবার শেষে কত নকল করলে ছোকর কবির দল। রবিকাকাকে প্রায়ই পরগনায় যেতে হত। নতুনকাকীমাও মারা গেলেন, জ্যোতিকাকামশায় ফ্রেনোলজি শুরু করলেন, লোক ধরে ধরে মাথা দেখেন আর ছবি আঁকেন। কিছুকাল আমাদের নাটক অভিনয় সব বন্ধ। এ যেন একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেল। ইতিমধ্যে আমরা বড়ো হয়েছি, স্কুল ছেড়েছি, বিয়েও হয়েছে। আমার আর সমরদার বিয়ের দিন রখী জন্মায় । তার পর এক ড্রামাটিক ক্লাব সৃষ্টি করা গেল। রবিকাকা খাস বৈঠকে ব্রাউনিং পড়ে আমাদের শোনান, হেম 3.88 Ž .