পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করবে, আমাদের নেমস্তন্ন করেছে। আমরা তো গেছি, রানী স্বমিত্র স্টেজে এল, একেবারে মেজোজ্যাঠাইম' । গলার স্বর, অভিনয়, সাজসজ্জা, ধরনধারণ, হুবহু মেজোজ্যাঠাইমাকে নকল করেছে। মেয়েদের আরো অনেকের নকল করেছিল, রবিকাকাদের নকল করতে পারবে কী করে । ছেলেদের পার্ট ততটা নিতে পারে নি। কিন্তু মেজোজ্যাঠাইমার স্বমিত্রাকে যেন সশরীরে এনে বসিয়ে দিলে। অদ্ভূত ক্ষমত অ্যাকূট্রেসদের, অবাক করে দিয়েছিল। রিহার্সেলেই আমাদের মজা ছিল। বিকেল হতে না হতেই রোজ মেজোজ্যাঠামশায়ের বাড়ি যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া গল্পগুজব, রিহার্সেল, হৈ-চৈ, ওইতেই আমাদের উৎসাহ ছিল বেশি। অভিনয় হয়ে গল পর আমাদের আর ভালো লাগত না । কেমন ফাঁকা ফাকা ঠেকত সব । তখন "কী করি’ “কী করি এমনি ভাব। রবিকাক তো থেকে থেকে পরগণায় চলে যেতেন, আমরা এখানেই থাকি— আমাদেরই হত মুশকিল। আর, কত রকম মজার মজার ঘটনাই হত আমাদের রিহার্সেলের সময়ে । সেবারে ‘রাজা ও-রানী’র রিহার্সেলের সময় আমাদের জমেছিল সব চেয়ে বেশি। ছেলেবুড়ে সব জমেছি সেই অভিনয়ে। অনেক জনতার পার্ট ছিল । বলেছি তো আমাকেই cছ-ছটা পার্ট নিতে হয়েছিল, অত লোক পাওয়া যাবে কোথায় । জগদীশ-মামা ছিলেন, তারও উৎসাহ লেগে গেল। জগদীশ মাম ভারি মজার মানুষ ছিলেন, সবারই তিনি জগদীশ মামা । এই জগদীশ মামা, কী রকম লোক ছিলেন শোনে। তার দাদা ব্রজরায় মাম, তিনিও এখানেই থাকতেন, তিনি তবু একটু চালাক-চতুর। তিনি ছিলেন ক্যাশিয়ার। একবার কর্তাদাদামশায় ব্রজরায় মামাকে ফরমাশ করলেন, ভালে তালমিছরি নিয়ে এসো। কর্তাদাদামশায়ের আদেশ, ব্রজমাম তখুনি বাজারে ছুটলেন টাকাকড়ি পকেটে নিয়ে। তিন দিন আর দেখা নেই। কর্তাদিদিমা ভাবছেন, ভাইয়ের কী হল। কর্তাদাদামশায়েরও ভাবন হল, তাই তো তিন দিন লোকটার দেখা নেই, সঙ্গে টাকাকড়ি আছে, কিছু বিপদআপদ ঘটল না কি। তখনকার দিনে নানা রকম ভয়ের কারণ ছিল । পুলিস খবর দিলেন। পুলিস এদিক-ওদিক খোঁজখবর করছে। এমন সময়ে তিন দিন বাদে ব্রজরায় মামা মুটের মাথায় করে মস্ত এক তালমিছরির কুঁদে এনে উপস্থিত। S 6 e