এখন হয়েছে কী, ব্রজরায় মামা বাজারে ভালো তালমিছরি খুঁজতে খুঁজতে কিছুতেই মনের মতো ভালে তালমিছরি পান না, বাজারেরই কেউ একজন বুঝি বলেছে যে বর্ধমানে ভালো মিছরি পাওয়া যাবে । ব্রজরায় মাম। সেখান থেকেই সোজা টিকিট কেটে বর্ধমান চলে গেছেন, সেখানে গিয়ে এ-গী ও-গী ঘুরে তিন দিন বাদে মিছরির কুঁদে এনে হাজির ৷ কর্তাদাদামশায় হাসবেন কি কাদবেন ভেবে পান না । সেই ব্রজরায় মামার ছোটো ভাই জগদীশমামা, বুঝে দেখে ব্যাপার। তা ‘রাজা ও রানী'র রিহার্সেল চলছে, রবিকাকা মেজোজ্যাঠাইমা সবাই ধরলেন, জগদীশ মাম তুমিও নেমে পড়ে । একজনই ঘুরেফিরে আসার চেয়ে নতুন নতুন লোকের নতুন নতুন ক্যারেক্টার থাকবে । আমিও খুব উৎসাহী। বললুম, খুব ভালো হবে। জগদীশ মামা বললেন, ন দাদা, ভুলেটুলে যাব শেযটায় । আমি বললুম, কিছু ভুল হবে না, সময়মত আমি তোমাকে খোচ দেব, পিছন থেকে বলে দেব, তুমি ভেবে না । এখন জনতার মধ্যে দুটি কথা, আধখানি লাইন বলতে হবে জগদীশ মামার। রবিকাক আবার বড়ো বড়ো করে লিখে দিলেন। আমরা তাকে রিহার্সেল দেওয়ালুম। কথা হচ্ছে জনতার মধ্যে একবার শুধু জগদীশ মাম৷ বলবেন যে ‘তা আপনার পাঁচজনে যা বলেন ।” রোজ রিহার্সেলের সময় হলেই আগে থাকতে* জগদীশ মামা পার্ট মুখস্থ করতে থাকেন । একে ওকে বলেন, ‘দেখো তো ভাই, ঠিক হচ্ছে কিনা, ভুলে যাচ্ছি না তো ? আর রোজই রিহার্সেলে ওঁর কথা কয়টি বলবার সময় হলেই সব ভুলে যেতেন, আমি এদিক-ওদিক থেকে খোচ দিতে থাকতুম, জগদীশ মাম, এবারে বলে তোমার পার্ট । উনি ঘাবড়ে গিয়ে কথাটি ভুলে যেতেন ; বলতেন, ‘তা তোমরা য। বলে দাদা, তা তোমরা যা বলে।’ রোজই এই কাণ্ড হতে লাগল। আর সেই জনতার সিনে আমাদের সে যা হাসি । শেষে কোনো রকম করে শেষ পর্যন্ত র্ত্যকে পার্ট মুখস্থ করানো গেল, কিন্তু পাঁচজনের পাচের চন্দ্রবিন্দু তার মুখে আসত না ; বলতেন, ত৷ পাঁচজনে যা বলেন । তিনি আবার আমাদের গম্ভীর ভাবে জিজ্ঞেস করতেন, কেমন হল দাদা । আমরা বলতুম, অতি চমৎকার, এমন আর কেউ করতে পারত না । তিনি তো মহা খুশি। Ꮌ8Ꮌ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।