নন্দলালকে পাঠিয়ে মন স্বস্থির হল না। নিজেই গেলুম দেখতে ঠিকমত -লাগানো হয় কি না । নন্দলালকে বললুম, এখন কাউকে কিছু বোলো না। আজ রাত্তিরে যখন ড্রেস রিহার্সেল হবে তখন সবাই দেখবে। তার পর স্টেজেতে নীল পর্দার উপরে যখন লাইট পড়ল, যেন সত্যিকার আকাশটি। সবাই একেবার মুগ্ধ। নন্দলালকে বললুম, নন্দলাল, দেখে নাও । কী চমৎকার দেখাচ্ছিল। শেষ টাচ, এক চাদ আর গুটি দুই বকৃঝকা । সেই চাদ ডাকঘরেও আছে, ফোটোতে দেখতে পাবে। সেইবার ফান্ধনীতে আমি সেজেছিলুম শ্রুতিভূষণ । শাস্তিনিকেতন থেকে ছোটো ছোটো ছেলেরাও এসেছিল বলেছি। ওখান থেকে গানটান কোনোরকম তৈরি করে আনা হত, আসল রিহার্সেল এখানেই হত আমাদের নিয়ে। খুব জমে উঠেছে রিহার্সেল । মণি গুপ্তও ছিল এখানে দলের মধ্যে। দেখি ওর কোনো পাটু নেই। বললুম, তুইও নেমে পড়, অভিনয়ে— কী পাটু দেওয়া যায়। বললুম, আমার চেলা সেজে ঢুকে পড়, বলে তাকেও নামিয়ে দিলুম। সে আমার পুথিটুথি নস্তির ডিবে আসন এই-সব নিয়ে ঢুকে পড়ল। ছোট্ট ছেলেট, গোলগাল মুখখান, লাল চেলি পরিয়ে গলায় পৈতে ঝুলিয়ে নন্দলাল সাজিয়ে দিয়েছিল। বেশ দেখাচ্ছিল। আমি পরেছিলুম শুড়তোলা চটি, গায়ে নামাবলী, যেমন পণ্ডিতদের সাজ, গরদের ধুতি, তা আবার কোমর থেকে ফলফল করে খুলে যায়। নন্দলালকে বললুম লম্বা একটা দড়ি দিয়ে কোমরে ধুতিটা ভালো করে বেঁধে দাও, দেখো যেন খুলে না যায় আবার স্টেজের মাঝখানে । কাপড়ের ভাবনাই ভাবব, না অভিনয়ের কথা ভাবব । আচ্ছা করে কোমরে লম্বী দড়ি তো জড়িয়ে নিয়ে তৈরি হয়ে নিলুম। মণীন্দ্রভূষণ থেকে থেকে নন্তির ডিবেট এগিয়ে দিত – আচ্ছা করে নস্তি নাকে দিয়ে সে যা অভিনয় করেছিলুম। রবিকাকা সেজেছিলেন অন্ধ বাউল। পিয়ার্সনকেও সেবার সেনাপতি সাজিয়ে নামানো হয়েছিল। তখন এক মেমসাহেব শাস্তিনিকেতনে কিছু কাল ー〉●8
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।