আমি বললুম, অমন কাজও কোরে না। ওকে শাদা রঙই দাও আর হলদে মাখাও, ভিতর থেকে নীল আভা বের হবেই। খানিক গেরিমাটি আনো। সব গায়ে মাখাবার দরকার নেই – জায়গায় জায়গায় যেখানে রুখে৷ কালো আছে সেখানে সেখানে লাগিয়ে দাও। নন্দলাল বাস্থদেবের হাটুতে কনুইতে ঘাড়ে এখানে ওখানে বেশ করে গেরিমাটির গুড়ে ঘষে লাগিয়ে দিলে। কালে রঙের উপরে গেরি লাগাতে দিব্যি যেন একটা আভা ফুটে উঠতে লাগল। এইটুকু করে দিয়ে আমি নন্দলালকে বললুম, এবারে একটু চোখ ভুরু টেনে ওকে ছেড়ে দাও । বেশ করে মালর্কোচ ধুতি পরিয়ে মাথায় একটা পটক, গলায় একটু গয়না এই-সব একটু-আধটু দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া গেল । সেদিন অডিয়েন্সের খুব ভিড়, কোথায় বসি । কৃতির বাড়ির সামনে নীচের তলায় একটু খিলেনমতে আছে। নন্দলাল আমার সঙ্গে । সেখানেই দুজনে কোনোমতে জায়গা করে চৌকির চেয়েও আরামে বসে রইলুম। বাতি জলল, সিন উঠল। বাস্থদেব যখন স্টেজে ঢুকল –"কী বলব তোমাকে – মনে হল যেন ব্রোঞ্জের মূর্তিটি। মনে ভয় ছিল বাস্থদেব এবার কী করে, শেষে না রবিকাকার তাড়া খেতে হয়। অন্য সব নাচ কানা সেদিন। বাসুদেবের নাচে সবই আশ্চর্য হয়ে রইল— যেন ব্রোঞ্জের নটরাজ জীবন্ত হয়ে স্টেজে নেচে দিয়ে গেল। শুধু রঙ মাখালেই স্টেজে খোলতাই হয় না। রঙ মাখানোর হিসেব আছে। ভগবানদত্ত চামড়াকে বাচিয়ে তবে রঙ মাখাতে হয়। এ কি সোনার উপর গিলটি করা –খোদার উপর খোদকারি ? যার যা রঙ তা রেখে সাজাতে হয়। অভিনয়ের পরে রবিকাকাকে বললুম, এই বাস্থদেবকে না নামালে তোমাদের প্লে জমতই না । এখন দেখো সাজের একটু অদলবদলে জিনিসটা কতখানি তফাত হয়। 'নটর পূজাতে আমরা ছিলুম না। তখন ওরা সবাই পাকা হয়ে গেছে — আমরা দেখবার দলে । রবিকাকা তার কিছুকাল আগে বিলেত থেকে ফিরে এসেছেন। আমাকে দাদাকে ফিরে এসে আরবী জোকা দিলেন। সেদিন অভিনয়ে অনেকেই আসবেন—লাটসাহেবের মেমও বুঝি ›ዓ e
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।