পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসবেন । রবিকাকা আমাদের বললেন, তোমরা ভালো করে সেজে এসে । আমরা রবিকাকার দেওয়া সেই আরবী জোব্বা পরে দ্বারে দাড়িয়ে আছি অতিথি রিসিভ করতে। 'নটর পূজা অভিনয় হল – নন্দলালের মেয়ে গৌরী নটী সেজেছে। ও যখন নট হয়ে নাচল সে এক অদ্ভুত নাচ। অমন আর দেখি নি। ড্রপ পড়তেই ভিতরে গেলুম। গৌরীকে বললুম, আজ যে নাচ তুই দেখালি ; এই নে বকশিশ। বলে রবিকাকার দেওয়া সেই জোব্বা গা থেকে খুলে দিয়ে দিলুম। ওকে আর কিছু বললুম না – নন্দলালকে বললুম, তোমার মেয়ে আজ আগুন স্পর্শ করেছে, ওকে সাবধানে রেখো । তার পরে আর-একবার দেখেছিলুম যখন তপতী হয়েছিল । অমিত তপতী সেজে অগ্নিতে প্রবেশ করছে। সেও এক অদ্ভুত রূপ। প্রাণের ভিতরে গিয়ে নাড়া দেয় । আমি তপতী’র সমস্ত ছবি এ কে রেখেছিলুম - পরে যত অভিনয়ই হয়েছে আজকাল, অমন-আর দেখলুম না – সে সত্যি কথাই বলব । তাই তো একবার রবিকাকাকে বললুম, করলে কী রবিকাকা, ঘরের পিদিম নিভিয়ে ফেললে, এখন বাইরের পিদিম জালিয়ে কী করবে । রবিকাকা বললেন, তা আর কী করা যায়, চিরকালই কি আর ঘরের পিদিম জলে । X 8 দেখো মনে সব থাকে। সেই ছেলেবেলা কবে কোনকালে দেখেছি রাজেন মল্লিকের বাড়িতে নীলে শাদায় নকশা কাটা প্রকাও মাটির জাল, গা-ময় ফুটো, উপরে টানিয়ে রাখত। ভিতরে চোঙের মতো একটা কী ছিল তাতে খাবার দেওয়া হত। পাখির সেই ফুটো দিয়ে আসত, খাবার খেয়ে আর-এক ফুটে দিয়ে বেরিয়ে যেত। অবাধ স্বাধীনতা, ঢুকছে আর বের হচ্ছে। মানুষের মনও তাই। স্মৃতির প্রকাণ্ড জালা, তাতে অনেক ফুটে । সেই ফুটে দিয়ে স্মৃতি ঢুকছে আর বের হচ্ছে। জালা খুলে বসে আছি, কতক বেরিয়ে গেছে › ዓ »