পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভেসে—এ গাছ ঘুরে, ও বাগানে ডুবে-যাওয়া গোল চক্কর ঘুরে, একটানা স্রোতে পড়ে চলতে চলতে ফটকের লোহার শিকে ঠেকে উলটে পড়ল কাদায়জলে-লটুপটু একগোছ বিচিলির লঙর ফেলে। ঈশ্বরদাদা খোড়াতে খোড়াতে লাঠি ঠক্ঠকিয়ে ভিণ্ডিখানায় এসে হাকলেন ‘বিশ্বেশ্বর । যাই—বলে বিশ্বেশ্বর ছকে কন্ধে হাতে দিতেই – শনির সাত, মঙ্গলে তিন, আর সব দিন দিন বলতেই হকে শব্দ দিতে থাকল – চুপ চুপ, ছুপ ছুপ, বুপুর ঝুপ । তখন বর্ষাকাল পড়লে সত্যি সত্যি বৃষ্টিবড় আকাশ ভেঙে খড়ের চাল, খোলার চাল, ফুটো করে আসত, এ দেখেছি। ডালে চালে খিচুড়ি চেপে যেত। মেঘ করলেই শহর বাজার ডুবত জলে, পুকুরের মাছ উঠে আসত রান্নাবাড়ির উঠানে, খেলা করতে করতে ধরা পড়ে ভাজা হয়ে যেত কখন বুঝতেই পারত না । ফুটে ছাত, ভাতে ভাত, ভাজ, মাছ। সাত রাত সাত দিন কমাঝম্‌। মটর ভাজি, কড়াই ভাজি, ভিজে ছাতি । যে দিকে চাও ভিজে শাড়ি ভিজে কাপড় পরদা টেনে হাওয়ায় দুলছে, তারই তলায় তলায় খেলে বেড়ানো সারাদিন । সন্ধে থেকে কোলা ব্যাঙে বান্তি বাজায়, রাজ্যের মশা ঘরে সেধোয় টাকাংদিং টাকাংদিং মশারি ঘিরে। দাসী চাকর সরকার বরকার সবার মাথায় চড়ে গোলপাতার ছাতা –শোলার টুপি ওয়াটারপ্রফ রেনকোট ছিল না ; ছিল ছেলেবুড়ো মিলে গানগল্প, বাবু ভায়ে মিলে খোশগল্প —আর কত কী মজা, আঠারো ভাজা, জিবেগজা । গুড়গুড়ি ফরসি দাজুরীর বোল ধরত গুডুক ভুডুক । ૨ এখানে দেখি ছোটো ছেলেরা হো-হে করে স্কুলে যায় আসন খাত বই ছু হাতে বুকে জড়িয়ে নিয়ে। কত ফুর্তি তাদের। এমন স্কুল আমার ছেলেবেলায় পেলে আমিও বুঝি-বা একটু-আধটু লেখাপড়া শিখলেও শিখতে পারতুম। বাড়ির কাছেই নর্মাল স্কুল। কিন্তু হলে হবে কী ? নিজের ইচ্ছেয় কোনোদিন যাই নি স্কুলে। পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই ; আজ পেটে ব্যথা, কাল মাথাধরার ছুতো—রেহাই নেই কিছুতেই। স্কুলে যাবার জন্য গাড়ি আসে গেটে। চীৎকার ›ዓg