মাছের মতে চোখদুটো লাল টকৃটক্ করছে। তার কাছে পড়ব কী ? যতক্ষণ ক্লাসে থাকি শিশুমন কাপে বলির পাঠার মতো। কোনোরকমে ছুটির ঘণ্টা পড়ে গেলে হাফ ছেড়ে বাচি । তার পর পড়ি মাধব পণ্ডিতের কাছে। বাংলা সংস্কৃত পড়ান ; অতি অমায়িক ভটচাজ্জি চেহারা, ঠিক যেন শিশুবোধের চাণক্য পণ্ডিতের ছবিখানি– মস্ত টিকি । সেই সময়ে একবার দিনে তারা উঠল, হঠাৎ ইস্কুল ছুটি হয়ে গেল। ছুটে সবাই বাইরে এলুম। ইস্কুলে একটা টেলিস্কোপ ছিল, তাই নিয়ে তারা দেখতে ঠেলাঠেলি লেগে গেল । সেই মাধব পণ্ডিতের কাছে পড়ি ‘পত্র পততি’, এমনি সব নানা সাধুভাষার বুলি । সেখান থেকে হেডমাস্টারের হাতে-পায়ে ধরাধরি করে অতিকষ্টে উঠলুম তো হরনাথ পণ্ডিতের কেলাসে । তার চোয়ালদুটো কেমন অদ্ভুত চওড়, আর শক্ত রকমের । কথা যখন ৰলেন চোয়ালদুটে ওঠে পড়ে, মনে হয় যেন চিবোচ্ছেন কিছু। তার কাছে পড়লুম কিছুদিন । এই করতে করতে তিনটে শ্রেণী উঠে গেছি। এইবার মাস্টারমশায়ের হাতে পড়ার পালা । এখন সেই শ্রেণীতে আসেন এক ইংরেজি পড়বার মাস্টার । তিনি এক ইংলিশ রীডার লিখে বই ছাপিয়ে তা পাঠ্যপুস্তক করিয়ে নিয়েছিলেন। সেই বই আমাদের পড়তে হয়। একদিন হয়েছে কি— ক্লাসে ইংরেজির মাস্টার আমাদের পড়ালেন p-u-d-d-i-n-g– পাডিং । আমাদের মাথায় কী বুদ্ধি খেলে গেল, বলে উঠলুম, মাস্টারমশায়, এর উচ্চারণ তে পাডিং হবে না, হবে পুডিং, আমি যে বাড়িতে এ জিনিস রোজ খাই ? মাস্টার ধমকে উঠলেন, ‘বল পাডিং । আমি বলি, 'ন', পুডিং । তিনি যত বলতে বলেন পাডিং, আমি আমার বুলি ছাডি নে । বা রে, আমি পুডিং খাই যে, পাডিং বলতে যাব কেন ? মাস্টার গো ধরলেন, পাডিং বলবেনই। আমি বলে চলি পুডিং । বাকি ছেলেরা থ হয়ে বসে দেখে কী হয় কাণ্ড । এই করতে করতে ক্লাসের ঘণ্টা শেষ হল । শাস্তি দিলেন চারটের পর এক ঘণ্টা কন্ফাইন’ ৷ ইস্কুল ছুটি হয়ে গেল ; বাড়ির গাড়ি নিয়ে রামলাল অপেক্ষা করছে দরজার সামনে । কিন্তু 'কন্ফাইন’, এক ঘণ্টার আগে যেতে পারি নে। মাস্টার নিজের বৈকালিক সেরে এলেন। ঘরে ঢুকে বললেন, ‘এবারে বল পাডিং। উত্তর দিলেম, পুডিং। যেমন শোন, টানাপাখার দড়ি দিয়ে হাত দুটো বেঁধে তৰে রে ব্যাদড় ছেলে, ৰলবি নে ? বলতেই হবে তোকে পাডিং। দেখি কেমন না বলিস ’ বলে সপাসপ জোড়া ৰেত AbrS
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।