'दकि रुझि' द'एण বরফওয়ালা বান। গা ঢালো রে, লিশি আগুয়ান । 'বেল ফুল বেল ফুল’ ঘন ইকে মালীকুল— সন্ধ্যাবেলার শব্দ হচ্ছে ওই বেলফুল । বেলফুল চাই বেলফুল হাকতে হাকতে শব্দ গলির এ দিক থেকে ও দিক চলে যায়। তাদের ডেকে বেলফুল কেনে দাসীরা, মালা গাথেন মেয়ের । ভর্সন্ধেবেলা মুশকিল-আসান আসে খিড়কির দরজায় চেরাগ হাতে, লম্ব দাড়ি, পিদিম জলছে মিটমিটু করে । বারান্দা থেকে দেখি তার চেহারা। দোরগোড়ায় এসেই হাক দেয়, ‘মুশকিল আসান ! মুশকিল আসান | দপ্তরে বরাদ থাকে, মুশকিল-আসান এলেই তাকে চাল পয়স যা হয় দিয়ে দেয় ; সে আবার হাক দিতে দিতে চলে যায় । আরো একটি শব্দ, সেটি এখনো থেকে থেকে কানে বাজে। দুপুরের সব যখন শোনশান, কোনো সাড়াশক নেই কোথাও, তখন শব্দ কানে আসে ‘কু-য়ো-র ঘটি তোলা’ । মনে হয় ঠিক যেন অদ্ভুত কোন একটি পাখি ডেকে চলেছে। রাত্তিরে বিছানায় শুয়ে জানলা দিয়ে দেখি ঘনকালে তেঁতুল গাছের মাথা। দাসীরা বলে, বংশের সকলের নাড়ী পোতা আছে তার তলায় । মাঝে মাকে ছাতের উপরে ভোঁদড় চলে বেড়ায়, সেই চলার শব্দে গল্প তৈরি হয় মনের ভিতরে ; ব্রহ্মদত্যি হাটছে, জটেবুড়ি কাশছে। জটেবুড়ি সত্যিই ছিল, লাঠি ঠক্ ঠক্ করে আসত ; ময়ূরে তার চোখ উপড়ে নিয়েছিল। ক্ষীরের পুতুল’-এ যে ষষ্ঠ বুড়ি একেছি ঠিক সেইরকম ছিল সে দেখতে। ও দিকে নীচে রাত দশটার পর নন্দ ফরাসের ঘরে নোটো খোড়ার বেহালা শুরু হয় । একটাই মুর, অনেক রাত্তির অবধি চলে একটান। বেহালা যেন স্বরে এক দুই মুখস্থ করছে— এক, দুই, তিন, চার , এক, দুই, তিন, চার। ওই থেকে পরে আমি একটা যাত্রার মুর দিয়েছিলুম। বাবামশায়ের বৈঠক ভাঙলে নন্দ ফরাসের ঘরে বৈঠক বসে— ছির মেথর, নোটো খেড়ি, আরো অনেকের। ভোরবেল বাড়ির সামনে ঘোড় মলে টপ টপ ঠপ, ঠপ, কাকপক্ষী ডাকার আগে এই শব্দ শুনেই ঘুম ভাঙে আমার। রোজ ঘুমোবার আগে আর ঘুম ➢byፃ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২০৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।