পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভেঙে এই দুটি শব্দ শুনি– বেহালার এক, দুই, তিন, চার। আর ঘোড়া মলার টপ, টপ, ঠপ, ঠপ,। তখন এক-একটা সময়ের এক-একটা শব্দ ছিল। এখন সেই শব্দ আর নেই, সব মিলিয়ে যেন কোলাহল চার দিকে। ট্যাকৃসির ভো-ভো, দোকানদারের চীৎকার, রাস্তার হট্টগোল, এ-সবে ঘরের কোণেও কান পাতা দায়। তার উপরে জুটেছে আজকাল মাথার উপরে উড়োজাহাজের ঘড়ঘড়ানি, রেডিওর ভন্‌ভনানি, আরো কত কী। তেতালার ছাদে জ্যোতিকাকামশায়ের পিয়ানোর স্বর, রবিকার গান, জ্যাঠামশায়ের হাসির ধমক, কোথায় চলে গেল সে-সব ! ত, সেই সময়ে দুপুরে বৈঠকখানাতেই একদিন আমি আবিষ্কার করলুম “লণ্ডন নিউজের ছবি । বাধানো লগুন নিউজ’ পড়ে ছিল এক কোনায়। সব-কিছু ঘেটে ঘেটে দেখতে গিয়ে বইয়ের ভিতরে ছবির সন্ধান পেলুম । সে কতরকম কাণ্ড-কারখানার ছবি, নিবিষ্ট মনে বসে বসে দেখি । একদিন ঘোষাল মাস্টার এসে ঢুকলেন সেই ঘরে । দিব্যি ভূড়িদার চেহারা তার ; খালি গায়ে যখন আসেন, তেল-চুকচুকে ভুড়িটি ঠিক যেন পিতলের ছাড়া একটি। তিনি ঘুরে ঢুকে বললেন দেখি কী দেখছ— বলে আমার হাত থেকে বইগুলি নিয়ে পাতা উলটে উলটে দেখতে লাগলেন । দেখতে দেখতে, একটা পাতায় আছে ফরাসী রানীর ছবি, তিনি সেই ছবিটি সামনে রেখে হাতজোড় করে তিনবার মাথায় ঠেকালেন। তার পর থেকে দেখি রোজই তিনি স্বানের পর ফরাসী রানীর ছবি বের করে তিনবার পেরাম করেন। কারণ আর বুঝি নে কিছু। দেবদেবীর ছবি এ নয়, তবে কেন এত পেয়ামের ঘটা। শেষে বড়দাকে একদিন জিজ্ঞেস করি, 'এর মানে কী বলো-না। বড়দা হেসে বললেন, ‘ওহে, তা বুঝি জানিস নে ? ঘোষালমশায়কে জিজ্ঞেস করেছিলুম যে ! তিনি বললেন এই ফরাসী রানী তার স্ত্রীর মতো দেখতে । তাই রোজ তিনি ওই ছবিকে পেন্নাম করেন।’ 8 সেদিন কে যেন আমায় বললে, “আপনি বুঝি ছেলেবেলায় খুব গান আর ছবি-আঁকার আবহাওয়ায় বড়ো হয়েছেন ? বললুম, মোটেও তা নয়। কী আবহাওয়ার ভিতর দিয়ে বড়ো হয়েছি জানতে চাইছ ? শোনো তবে । ছবি গান ছিল বৈকি বাড়িতে। বাবামশায়ের শখ ছিল ছবি আঁকার ; ծԵ-Ե