মাদুর নিয়ে আসে। ছোটোপিসিম উঠে উচু-পাচিল-ঘের ছাদে গিয়ে চুল বাধতে বসেন, পোষা পায়রাগুলো খোপ থেকে বেরিয়ে এসে ছোটোপিসিমাকে ঘিরে ঘাড় নেড়ে বকম বকম বকে বকে নাচ দেখায়। ছোটোপিসিমা আমার হাতে মুঠো মুঠে দানা দেন ; ছড়িয়ে দিই, তার চক্কর বেঁধে কুড়িয়ে কুড়িয়ে খেয়ে উড়ে বসে ছাদের কানিশে সারি সারি। পড়ন্ত রোদ তাদের ডানায় ডানায় বক্মক্ করে। কোনো কোনো দিন বা দেখি ঘূর্ণি হাওয়ায় লাল ধুলো পাক খেয়ে খেয়ে উড়ে গেল। বাইরের ছবিও দেখি ; আবার খেলাধুলোর শেষে ঘরের কোনায় সন্ধেবেল পিতলের পিলস্থজের উপর পিদিম জলে, তারই কাছে টিকটিকি নড়েচড়ে পোকা ধরে, তাও দেখি চেয়ে অনেকক্ষণ । এইরকম ঘর-বাইরের কত কী ছবি দেখতে দেখতে বেড়ে উঠেছি। ভিতর দিকটা দেখবার কৌতুহল আমার ছেলেবেলা থেকে আছে। বন্ধ ঘরের ভিতরটা, ঘেরা বাগানের ভিতরটা, দেখতে হবে কী আছে ওখানে । খেলনা, দম দিলে চলে, চাকা ঘোরে ; দেখতে চাই ভিতরে কী আছে। કરું সেদিন পর্যন্তও ছেলেদের খেলনা নিয়ে খুলে খুলে আবার মেরামত করেছি। ছেলেদের খেলন হাতে নিলেই মা বলতেন, “ওই রে, এবারে গেল জিনিসট, ভিতর দেখতে গিয়ে ভাঙবে ওটি।’ ত ছেলেবেলায় একবার ভিতর দেখতে গিয়ে কী কাণ্ডই হয়েছিল শোনো । বড়োমা থাকেন তেতলার একটি ঘরে । তারও নানারকম পাখি পোষার শখ। পোষ টিয়ে, পোষা লালমোহন হীরেমোহন। লালমোহনের দাড়টি আগাগোড়া ঝকৃঝকৃতকৃতকৃ করছে সোনালি রঙে । ঘরের একপাশে একআলমারি-বোঝাই খেলনা ; সে-সব তার শখের খেলনা, কাউকে ধরতে ছুতে দেন না। অনেক করে বললে কখনো একটা-দুটো খেলনা বের করে নিজের হাতে দম দিয়ে চালিয়ে দেন মেঝেতে ; আবার তুলে রাখেন। সেই বড়োমার ঘরে যেতে হত একটি ঘোরানো সিড়ি বেয়ে। বরাবর তেতলার চিলে-ছাদ অবধি উঠে গেছে সেই গোল সিড়ি । তারই মাঝামাঝি এক জায়গায় মাটির একটি হাত-দেড়েক কেষ্টমূতি, তাকের উপর ধর । আমার লোভ সেই মাটির কেষ্টটর উপর। একদিন দুপুরে সেই সিড়ি বেয়ে উঠে বড়োমার কাছে দরবার করলুম, “আমাকে মাটির কেষ্টট দেবে ? বড়োমা খানিক ভেবে বললেন, ‘চাস ? তা নিয়ে যা । ভাঙিস নে ' বুড়ি দাসী তাক থেকে কেষ্টট পেড়ে আমার হাতে У> е
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২০৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।