পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমরদার চাকর দুর্গাদাস। আমার রামলাল, ভালোমানুষ সে । পদ্মদাসী চলে যেতে রামলাল বহাল হয় আমার কাজে । রমানাথ ঠাকুরের খাস চাকর ছিল আগে । তিনি চাকর রাখতেন নরম হাত দেখে। গায়ে তেল মাখাতেন বোধ হয় ; কড়া হাত গায়ে লাগলেই ধমকে উঠতেন, ‘যাঃ যাঃ, এ যেন গাঁয়ে খড়র মাজছে । রামলালের হাত ছিল নরম। কী কারণে তাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন জানি নে ; বোধ হয় দেশে গিয়ে ফিরতে দেরি করেছিল। যা হোক, আমি তো পড়লুম তার চার্জে। সব ছেলেদের একটি করে চাকর থাকে। তারাই যেন মাস্টার। আদবকায়দা শেখায়, চোখে চোখে রাখে। কারণ, ছেলেরা কিছু করলে দোষ চাকরদেরই। চাকরদের কাছেই জিন্মে থাকে ছেলেদের এক-একজনের এক-একটি আলমারি, তাতে যার যার কাপড়জাম, থালাবাসন, ব্যবহারের যাবতীয় বস্তু। চাবিও থাকে চাকরদের কাছেই । দবকারমত বের করে দেয়, আবার ধুয়ে মুছে সাফ করে তুলে রাখে। দুধ খাবার বাটিও থাকে বাড়ির ভিতরে দাসীর কাছে । তোশাধানী শুধু চাকরদের থাকবার জন্তে, বেয়ারারা থাকে অন্য দিকে। ঘরের উত্তরে দক্ষিণে দু দিকে দু সারি আলমারি কাপড়ে বাসনে বোঝাই । পুবে পশ্চিমে কয়েকখানা বড়ে বড়ো তক্ত পাতা, তক্তার মাঝখানে একটি করে বাক্স বসানো । ভাল ফুলে দেখি, তাদের খেলার দাবীর ছক, ভাস, আয়না, চিরুনি, এই-সব নানা জিনিষপত্রে ভরা। সেই তক্তার উপরেই মাদুর বালিশ বিছিয়ে তারা ঘুমোয়। আবার কোনো-কোনোদিন দেখি, বাবামশায়দের বৈঠক ভাঙলে তার ফিটফাট বাবু সেজে রূপোর ট্রেতে করে সোডা লেমনেড খায়, রুপোর পেয়ালায় চা পান করে। বাবুদের আডড ভাঙলে তাদের আডড শুরু হয় । সে বয়সে চাকরদের তোশাখানায় যখন-তখনই যেতে পারি, সেখানে যাবার আমার ফ্রী লাইসেন্স, কেউ বারণ করে না। রামলীল বলে, ‘এসেছ ? আচ্ছ, থাকে। এখানেই ।” তাদেরই তেল-চিটচিটে বালিশ মাথায় দিয়ে শুয়ে পড়ি। পাশে রামলাল বসে বাবামশায়ের ধুতি পাট করে দেখি, দেখতে দেখতে ধুতি চুনট করে যখন ছেড়ে দেয় ফুলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। তোশাখানার পাশে উত্তর দিকটায় ভিত্তিখানা। চানের ঘরে যেতে হয় ভিণ্ডিখানার ভিতর দিয়ে, বড়ো হয়েছি, সাতে পড়েছি ; এখন তো আর ર હ\૭