পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এসেই একটা ভাঙা চৌকিতে বসে বলেন, “বিশ্বেশ্বর। বিশ্বেশ্বরের তৈরিই থাকে সব। এই-ষে বাবু বলে ইকোটি হাত বাড়িয়ে ধরলে। ঈশ্বরবাৰু তা হাতে নিয়ে ফক্ ফক্‌ করে কয়েকবার ধুয়ো ছেড়ে ইকোটি ফিরিয়ে দিয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে তা থেকে একটি পয়সা বিশ্বেশ্বরের হাতে দিয়ে বলেন, “এই নাও। বিশ্বেশ্বর সেটি পকেটে রাখে। ঈশ্বরবাবু খোড়াতে খোড়াতে চলে যান বাজারে । সন্ধেবেলা যখন উপরে উঠে আসেন ভিণ্ডিখান হয়ে, বিশ্বেশ্বর তখন আবার সেই একটি পয়সা ফেরত দেয় তাকে, তিনি তা রুমালে বেঁধে রাখেন। রোজই দেখি, এক পয়সার লেন-দেন চলে ঈশ্বরেতে বিশ্বেশ্বরেতে । এর মানে কী, কে জানে তখন। সকালে ঈশ্বরবাবু চলে গেলে আসেন মণিখুড়ো। 'কই বাবা বিশ্বেশ্বর, আছে কিছু ? 'আজ্ঞে, হ্যা হ্যা, নিন-না, এখনো আছে এতে।” বলে ঈশ্বরবাবুর সেই ইকোটি তার হাতে তুলে দেয়। তিনি আবার ফক্ ফক্ করে খানিক ধুয়ো ছাড়েন। এই মণিখুড়ে। আর বিশ্বেশ্বরে একবার কেমন লেগেছিল শোনে। এখন, সামনে পুজে এসে গেছে, আর বেশি দেরি নেই। মণিখুড়ে বাবামশায়ের কাছে পার্বণী চেয়ে নিয়ে শখ করে বাজার থেকে একজোড় কালে কুচ কুচে বানিশ করা জুতো কিনে এনেছেন, পায়ে দিয়ে পুজো দেখতে যাবেন । কাগজে মোড় জুতোজোড়া এনে ভিণ্ডিখানার এক কোনায় গুজে রেখে দিলেন—কী জানি চাকরবাকর কেউ যদি সরিয়ে ফেলে, এই ভয় । বিশ্বেশ্বর ঘরেই ছিল, দেখলে ব্যাপারটা—বাবু কী যেন এনে রাখলেন কোণে । মণিখুড়ে তো জুতো রেখে তামাক খেয়ে চলে গেলেন অন্ত কাজে। বিশ্বেশ্বর এই ফাকে জুতোজোড় বের করে নিয়ে সেই ঘরেই আর-এক কোণে লুকিয়ে রেখে দিলে। এ দিকে মণিখুড়ে ফিরে এসে জুতো আর পান না, ঘরের এ দিক ও দিক খুজে সারা, কোথাও জুতো নেই। বিশ্বেশ্বরকে জিজ্ঞেস করেন, সে বলে, ‘কী জানি বাৰু, আমি দেখি নি ও-সব । আমি থাকি আমার কাজে ব্যস্ত। তবে কী জানেন, যে আগুন খেয়েছে তাকে কয়লা ওগরাতেই হবে। জুতো যাবে কোথায় ?’ মণিখুড়ে বলেন, ‘সে তো বুঝলুম, কিন্তু কে নিলে জুতোজোড় । শখ করে আনলুম পুজো দেখব বলে ' বিশ্বেশ্বর সে-সব কথায় কানই দেয় না। মণিখুড়ে তাকে তাকে আছেন। পরদিন সকালবেল বিশ্বেশ্বর রোজকার মতো বাবামশায়ের জন্ত তামাক সাজছে ; মণিখুড়ে এক কোনায় হকে হাতে বসে। বিশ্বেশ্বর কিসের

  • रे ● €