জন্য যেই-না একটু ঘরের বাইরে গেছে, টেবিলের উপর ছিল সারি সারি রুপোর মূখনল সাজানে, মণিখুড়ে তা থেকে বাবামশায়ের মুখনলটা সরিয়ে ফেললেন। বিশ্বেশ্বর ধরে ঢুকল। মণিখুড়ো ও দিকে বসে ইকো হাতে ধোয়া ছাড়ছেন আর আড়ে আড়ে এ দিক ও দিক চাইছেন । বিশ্বেশ্বর তো তামাক সেজে গড়গড়ার নল গোলাপজল দিয়ে, কাঠি দিয়ে, খুচিয়ে খুঁচিয়ে সাফ করে, মুখনল পরাতে যাবে—মুখনল নেই। কী হবে এখন ? বিশ্বেশ্বরের চক্ষুস্থির। কে নিলে বাবুর ফরসির মূখনল 1 অস্থির হয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগল। এ দিকে বাবামশায়ের তামাক খাবার সময় হয়ে এসেছে। ঠিক সময়ে তামাক দিতে না পারলে মহা মুশকিল। মণিখুড়োকে জিজ্ঞেস করে ; তিনি বলেন, "কই বাবা, দেখি নি কিছু। আমি তো এখানে বসে সেই থেকে হুকো খাচ্ছি। তবে কী জান, যে আগুন খেয়েছে তাকে কয়লা ওগরাতেই হবে । ভেবে কী করবে ? এই দেখে-না কাল আমার জুতোজোড়াটি কেমন লোপাট হয়ে গেল। খুঁজে দেখো, পাবে হয়তো—যাবে কোথায় নল ? বিশ্বেশ্বর বললে, “হ্যা, হ্যা, তা হলে খুঁজে দেখি। আপনার জুতোই বা যাবে কোথায় ? বলে ঘরের এ কোনায় ও কোনায় খুজতে খুঁজতে এক জায়গা থেকে কাগজে মোড়া জুতো বের করে আনলে, বললে, ‘বাবু, এই-যে আপনার জুতো পাওয়া গেছে । মণিখুড়ে বললেন, “ওই-যে, ওই কোনায় তোমার মুখনল_ চক্চক্ করছে। বিশ্বেশ্বর তাড়াতাড়ি জুতো ফেরত দিয়ে মুখনল নিয়ে বঁচে ; দেউড়িতে দরোয়ানদের বৈঠক। মনোহর সিং বুড়ে দরোয়ান মস্ত লম্বা চওড়া, ফরস। গায়ের রঙ, ধবধব করছে শাদা দাড়ি । সকালে সে এক দিকে খালি গায়ে লুঙ্গি পরে বসে দই দিয়ে দাড়ি মাজে, আর চার দিকে অন্য দরোয়ানর। কুস্তি করে, ডাম্বেল ভাঁজে। এক পাশে এক দরোয়ান একটা মস্ত গয়েশ্বরী থালাতে একতাল আটার মাঝখানে গর্ত করে তাতে খানিকট। ধি ঢেলে মাখতে থাকে। সে এক পর্ব সকালবেলায় দেউড়িতে । এ দিকে মনোহর সিং দই দিয়ে দাড়িই মাজছে বসে বলে। ঘণ্টাখানেক এইভাবে মেজে বঁ হাতে ছোট্ট একটি টিনের আয়না মুখের সামনে ধরে, একরকম কাঠের চিরুনি থাকত তার ঝুঁটিতে গোজ, সেই চিরুনি দিয়ে দাড়ি বেশ করে আঁচড়ে কাপড় জামা পরে কোমরে ফেটি বেঁধে, এক পাশে প্রকাও কাঠের সিন্দুক, তাতে ঠেস দিয়ে দোজাকু হয়ে যখন বসে দু উরুতে দু হাত রেখে, কী বলব, ঠিক যেন 及罗心
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।