সেই শিশুমনের সংগ্রছ কাজ দেয়। হাতের চুড়িগুলি জাকতে কোন রঙের পর কোন রঙের টান দিতে হবে জানি, সেজন্ত আর ভাবতে হয় না। তুমি কে সেদিন বললে, সাওতালনীদের খোপা আপনি কেমন করে ঠিকটি একে দিলেন ? খোপার কত রকম প্যাচ সেই চুল বাধার ঘরে বসে শিশুদৃষ্ট শিশুমন ধরেছিল। মা বসে আছেন কাঠের তক্তপোশে, দাসীরা চুল বেঁধে দিচ্ছে ছোটে। ছোটে বউ-মেয়েদের। সে কত রকমের চুল বাধার কায়দা, খোপার ছাদ। বেষ্টিমী বসে গাইত, কানড় ছাদে কবরী বান্ধে। সেই কানড় ছাদে খোপা বাধত বসে পাড়াগায়ের দাসীরা । তোমরা খোপা তো বাধো, জানো সে খোপ কেমন ? মোচা খোপা, কলা খোপা, বিবিয়ানা খোপা, পৈচে ফাস, মন-ধরা খোপার ফাস, কত তার বর্ণনা দেব ! কত-বা একে দেখাব । এইবার আসত ফুলওয়ালী কলাপাতার মোড়কে ফুলমাল হাতে। সেই ফুলমালা নিজের হাতে জড়িয়ে দিতেন মা খোপায় খোপায়। সন্ধেতার উঠে যেত, চাদ উঠে যেত। সন্ধে হলেই গোপে তা দিয়ে দক্ষিণের বারান্দায় বসে আলসেমি করি— মতিবাৰু আসেন, শুামন্বন্দর আসেন। আমি বসি কোনোদিন ম্যাণ্ডোলিন নিয়ে, কোনোদিন-বা এস্রাজ নিয়ে। মতিবাৰু শিবের বিয়ের পাচালী গান— তোরা কেউ বাস নে ওলো ধরতে কুলো কুলবালা, মহেশের ভূতের হাটে এ-সৰ ঠাটে সন্ধেৰেল।। ষে রূপ ধরেছিল তোরা, চিত-উন্মত্ত-করা, চা-বের্ন ধরায় ধরা, খোপায় ঘেরা বকুলমাল। এইরকম বকুলমাল জুইমালায় সাজানো সে-বয়সের দিনরাতগুলো আনন্দে কাটে। মা রয়েছেন মাথার উপরে, নির্ভাবনায় আছি । ভুবনবাই বলে একটা বুড়ি আসত। মা তাকে বউদের গান শোনাতে বলতেন। সখীসংবাদ, মাথুর গাইত সে এককালে আমার ছোটোদাদামশায়ের আমলে— তোরা বাস নে বাসনে ৰাস নে দূতী। গেলে কথা কবে না সে নব ভূপতি। যদি বাৰি মধুপুরে •আমার কথা কোস নে তারে— বৃন্দে, তোরে ধরি করে, রাখ এ মিনতি । ऐ९è>
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।