পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফোকলা দাতে তোতলা তোতলা স্বরে সে এই গান গেয়ে মরেছে। কিন্তু সেই বুড়ি যেটুকখানি ধরে গেছে আমার মনে, সেই বস্তুটুকুও ষে আমার কৃষ্ণলীলার কোনো ছবিতে নেই তা মনে কোরো না । নাননীবাই শুনেছি এক কালে লক্ষেীয়ের খুব নামকর বাইজি ছিল ; রুপোর খাটে শুত, এত ঐশ্বর্য। সর্বস্ব খুইয়ে সে আসে ভিখিরির মতো ; পাচিল-ঘেরা গোল চক্করের কাছে বসে গান গায়, এ-বাড়ি ও-বাড়ি থেকে কিছু টাকাপয়সা যা পায় নিয়ে চলে যায়। বুড়োবয়েসেও চমৎকার গলা ছিল তার, এখনকার অনেক ওস্তাদ হার মেনে যায়। শ্রীজানও আসে। সেও বুড়ো হয়ে গেছে। চমৎকার গাইতে পারে। মাকে বললুম, 'ম, একদিন ওর গান শুনব ।’ মা বললেন শ্রীজানকে । সে বললে, ‘আর কি এখন তেমন গাইতে পারি। বাবুদের শোনাতুম গান, তখন গাইতে পারতুম। এখন ছেলেদের আসরে কী গাইব ? মা বললেন, “ত হোক, একদিন গাও এসে, ওরা শুনতে চাইছে।’ শ্রীজশন রাজি হল, একদিন সারারাতব্যাপী শ্রীজানের গানের জলসায় বন্ধুবান্ধবদের ডাক দেওয়া গেল। নাটোরও ছিলেন তার মধ্যে। বড়ো নাচঘরে গানের জলস বসল। শ্রীজান গাইবে চার প্রহরে চারটি গান। শ্রীজান আরম্ভ করল গান। দেখতে সে কুন্দর ছিল না মোটেই ; কিন্তু কী গলা, কোকিলকণ্ঠ যাকে বলে। এক-একটা গান শুনি আর আমাদের বিস্ময়ে কথা বন্ধ হয়ে যায়। চুপ করে বসে তিনটি গান শুনতে তিন প্রহর রাত্রি কাবার 1 এবারে শেষ প্রহরের গান ! বাতিগুলো সব নিবে এসেছে, একটিমাত্র মিটমিটু করে জলছে উপরে। ঘরের দরজাগুলি বন্ধ, চারি দিক নিস্তব্ধ যে যায় জায়গায় আমরা স্থির হয়ে বসে। শ্রীজান ভোরাই ধরলে । গান শেষ হল, ঘরের শেষ বাতিটি নিবে গেল—উষার আলো উকি দিল নাচঘরের মধ্যে । কানাড়া আর ভৈরবীতে শ্রীজান সিদ্ধ ছিল । আর-একবার গান শুনেছিলুম। তখন আমি দস্তুরমত গানের চর্চা করি। কোথায় কে গাইয়ে-বাজিয়ে এল গেল সব খবর আসে আমার কাছে । কাশী থেকে এক বাইজি এসেছে, নাম সরস্বতী, চমৎকার গায়। শুনতে হবে। এক রাত্তিরে ছ শো টাকা নেবে। শুামস্বন্দরকে পাঠালুম, “যাও, দেখে কত কমে রাজি করাতে পারে । শু্যামস্বন্দর গিয়ে অনেক বলে কয়ে তিনশো টাকায় 懿譬 २३>