কাজে লাগত। সেই তিনিই বলেছিলেন, "জান ভাই ? এ বাড়িতে দাড়ির প্রচলন এই আমা হতেই।’ সেই লাঠিটি দিয়ে দাদার একটি ছবিতে ফ্রেম করেছিলুম পরে। নবীনবাবুও ছিলেন বড়ে মজার লোক। বাজি রেখে চলন্ত মেল-ট্রেন থামিয়ে চাকরি খোয়ালেন। বাতে পঙ্গু হয়ে শুয়ে আছেন ; চোর ঘরে ঢুকে সব জিনিসপত্তর নিয়ে গেল চোখের সামনে দিয়ে, নড়বার শক্তি নেই, চেচিয়েই সার। স্ত্রীর সঙ্গে একটু ঝগড়াঝাটি হলেই চাকর প্রেমলালকে ডাকতেন, “আমার ছুরিটা নিয়ে এসো, গলায় দেব। এ প্রাণ আর রাখব না " চাকর বেশ শানানো ছুরি এনে হাজির করলে বলতেন, ‘ওটা কেন ? আমার সেই আম-কাটা ভোতা ছুরি নিয়ে এসো।’ এমন কত মজার মজার ঘটনা সব । তিনিও একদিন চলে গেলেন । মার বড়ো নাতি, দাদার বড়ে ছেলে গুপুর বিয়ে হল । দক্ষিণের বারীন্দ কাড়ে লণ্ঠনে আটচালায় মতিবাবু একেবারে গন্ধৰ্বনগর করে সাজিয়ে দিলেন। নাচে গানে থিয়েটারে জমজমাট হয়ে উঠল বারমহল, অন্দরমহল, নাচঘর, বাগান, দক্ষিণের বারান্দ, সারা জোড়াসাকোর বাড়িটাই । তার পর কলকাতায় প্লেগ এল, ভূমিকম্প এল । তেতলা বাড়ি ছেড়ে গেলুম চৌরঙ্গিতে । সেইখানে গুপু মেনিনজাইটিস রোগে চলে গেল আমার মায়ের কোলে মাথা রেখে। মা তার ছোট বউকে বুকে নিয়ে কেঁদেছিলেন, ‘আমার সব পুরোনো শোক আজ আবার নতুন করে বুকে বাজল রে। ফিরে এলুম আবার সেই দক্ষিণের-বারান্দা-ওয়াল জোড়াসাকোর ধারের বাড়িতে । মস্ত বাড়খাওয়া জাহাজ যাত্রী নিয়ে ফিরে এসে লাগল বন্দরে । মার মন খারাপ। কী করে তাদের মন শাস্ত হয় সকলেরই এই ভাবনা। ম আবার ভাবছেন, আমরা কী করে সাত্বনা পাই। দিন যায় এইভাবে । দীনেশবাবু এলেন সে সময়ে, তিনি একদিন এনে উপস্থিত করলেন ক্ষেত্রনাথ চুড়ামণিকে। ঠিক হল রীতিমত ভাগবত-কথা শুনব । মাকে বলে বন্দোবস্ত করা গেল । কখকের বেদী পাতা গেল নাচঘরে । কখকঠাকুর বেদী জমিয়ে বসলেন। ছেলেবুড়ে, চাকরদাসী, কর্মচারী, আত্মীয়-বন্ধু সবার কাছে খবর রটে গেল— কথকতা হৰে । চলল কথকত মাসের পর মাস। খুব জমিয়ে তুললেন ক্ষেজেনাখ কখক । যেন তিলভাণ্ডেশ্বর মহাদেবটি, নধর কালো দেহ। চিকের ॐ 0 ●
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।